খেলাধুলা প্রতিবেদক : আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুভসূচনা করল বাংলাদেশ। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সফরকারী দলকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা।টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা জিম্বাবুয়ে স্বাগতিকদের ঘূর্ণি ও পেসের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে ৮ ওভারের মধ্যে হারিয়ে বসে ৭ উইকেট! যদিও এরপর লড়াই করে স্কোরটা ৪১/৭ থেকে ১২৪/১০ পর্যন্ত নিয়ে যেতে সমর্থ হয় দলটি। জিততে বাংলাদেশকে করতে হতো ১২৫ রান। মাঝারি এই টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫ রানের মাথায় লিটন দাসকে হারায় স্বাগতিকরা। দ্রুত উইকেট হারানোয় রানের চাকাও শ্লথ হয়ে পড়ে। এরপর দুই দফায় বৃষ্টির বাধায় পড়ে ম্যাচ। তবু জয় আটকায়নি লাল-সবুজদের। অভিষেকেই ঝড়ো ফিফটি করা তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।তানজিদ ৪৭ বলে ৮টি চার ও ২ ছক্কায় ৬৭, তাওহিদ হৃদয় ১৮ বলে ৩৩ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ২৪ বলে ২১ রান করেন। যদিও জিম্বাবুয়ের বাজে ফিল্ডিং বাংলাদেশের কাজটি সহজ করে দেয়। তানজিদ তিন-তিনবার জীবন পেয়েছেন অতিথি দলের ফিল্ডারদের বদান্যতায়! ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ক্রেগ আরভিনকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন স্পিনার মেহেদী হাসান। এরপর তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন উইকেট শিকারের উৎসবে নাম লেখান।
মেহেদী ১৬ রানে নেন দুটি উইকেট। তাসকিন ও সাইফউদ্দিন উভয়ই নেন তিনটি করে উইকেট। ইনিংসের শেষ বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে আউট করেছিলেন সাইফউদ্দিন, যদিও বলটি ‘নো’ হলে উইকেটবঞ্চিত হন তিনি। তবু প্রায় দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফেরাটা স্মরণীয়ই হলো এই পেসারের।৭১ রানে ৭ উইকেট পতনের পর ক্লাইভ মাদান্দে (৩৯ বলে ৪৩) ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা (৩৮ বলে ৩৪) লড়াই করে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচে রাখেন। অষ্টম উইকেটে ৬৫ বলে ৭৫ রান যোগ করেন দুজন। এটা জিম্বাবুয়ের জার্সিতে অষ্টম উইকেটে রেকর্ড পার্টনারশিপ। মুতুম্বামি ও কাইল জার্ভিসের ৫৮ রান ছিল আগের রেকর্ড। গতকাল বাংলাদেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ঘটেছে ওপেনিং ব্যাটার তানজিদ হাসানের। টসের আগে তার মাথায় ক্যাপ পরিয়ে দেন দলের জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ঘটেছে জয়লর্ড গাম্বির। তবে অভিষেক রাঙালেন তানজিদ। ম্যাচসেরা না হলেও তিনি বাংলাদেশের জয়ের অন্যতম নায়ক। হার শেষে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ক্যাচ ড্রপ নিয়ে বললেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনটি ক্যাচ ছাড়ার মাশুল আমাদের দিতে হলো। এটা না হলে চিত্র অন্যরকম হতে পারত। খেলায় ভালো-মন্দ দিন আসে, তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, নিজেদের কাজটি ঠিকঠাক করতে পারলে আমরা যেকোনো দলকেই হারাতে পারি।’আগামী রোববার একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ চট্টগ্রামে, শেষ দুটি ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১২৪ (মাদান্দে ৪৩, মাসাকাদজা ৩৪; তাসকিন ৩/১৪, সাইফউদ্দিন ৩/১৫, মেহেদী ২/১৬)। বাংলাদেশ: ১৫.২ ওভারে ১২৬/২ (তানজিদ ৬৭*, তাওহিদ ৩৩*, শান্ত ২১; জঙ্গুই ১/১৪)। ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: তাসকিন আহমেদ (বাংলাদেশ)।