
ঘাঁস চাষ করে স্বাবলম্বী বীরগঞ্জের শামীমা বেগম
মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি:
শামীমা বেগম (৩৮) চার বছর আগের জীবনের সঙ্গে এখন কোনো মিল নেই। ওই সময় তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি ছিল না। অন্যের জমিতে কামলা খেটে কোনোরকমে সংসার চালাতেন তার স্বামী। একবেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা জুটত না। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে প্রায় উপোস থাকতে হতো। আর আজ তিনি সফল ঘাঁসচাষি। সুন্দর বাড়ি, বিশ শতক জমির মালিক। উপজেলার বীরগঞ্জ পল্টাপুর ইউনিয়নের কুসুমতৈড় গ্রামের শামীমা বেগমের ভাগ্যের চাকা বদলে গেছে ঘাঁস চাষে।
এখন এলাকার অনেক ঘাঁসচাষির পথপ্রদর্শক তিনি। উপজেলার পৌর শহরে থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পাল্টাপুর ইউনিয়নের কুসুমতৈড় গ্রাম। এই গ্রামে শামীমা বেগমের বাড়ি। গ্রামটিতে ঢুকেই চোখে পড়ে সবুজের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ ঘাঁসের খেত। কেউ ঘাস কাঁটছেন, কেউ আঁটি বেঁধে অটো ভ্যান করে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। সরজমিনে শামীমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বাড়ির পাশে লাগানো জমির ঘাঁস কাঁটছেন। সাংবাদিক পরিচয় শুনে আইলে উঠে আসেন তিনি। এরপর ঘাঁস চাষের গল্প শোনান।
শামীমা পীরগন্জ নিউজ এক্সপ্রেসকে জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মেয়ে শামীমা বেগম। ২০০৫ সালে পাল্টাপুর ইউনিয়নের কুসুমতৈড় গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মঞ্জু আলী (৪৫) শামীমাকে বিয়ে করেন। স্বামী সন্তান নিয়ে শাীমমার ছোট্ট পরিবার। দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন তার স্বামী। কাজ পেলে খাবার জুটত, না পেলে অনাহারে থাকতে হতো। তাঁদের এই কষ্ট দেখে বীরগঞ্জ এপি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সার্বিক সহযোগীতা করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে ঘাঁষ চাষের জন্য পরামর্শ ও সাহায্য প্রদান করেন। কুসুমতৈড় গ্রামটি দেখতে দেখতে ঘাঁসের খেত সবুজে ভরে ওঠে। ৫০ দিনের মাথায় ঘাঁস বিক্রি করে খরচ বাদে পাঁচ হাজার টাকা আয় আসে।
স্বামীও ঘাঁস চাষে তাঁর সঙ্গে কাজে হাত লাগায়। এভাবে একপর্যায়ে শামীমা বেগম হয়ে ওঠেন সফল ঘাঁসচাষি। শুধু যে ঘাঁস চাষ করেন তা না, বীরগঞ্জ এপি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ থেকে গাভী পেয়েছেন তিনি । সেই গাভী থেকেও দুধ পায় সেই দুধ বাজার জাত করে এবং পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। ঘাঁস চাষ করে শামীমা শুধু নিজের ভাগ্যই বদল করেননি। গ্রামের অনেককেই তাঁর পরামর্শ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন।