
কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ-
নওগাঁর বদলগাছীতে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে স্লিপের বরাদ্ধ থেকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণে নামহীন কোম্পানির হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে।বিষয়টি নিয়ে গত মাচ মাসে বিভিন্ন জাতীয়,আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপকরণগুলো পরিবর্তনের কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। উপজেলার শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে এমন মানহীন সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কোমলমতি শিশুদের জন্য এমন গুরুত্বপূন একটি জায়গায় নিন্মমানের সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় একশত তেত্রিশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পনের হাজার।2020-21অথ বছরে স্লিপ থেকে একশত একুশটি বিদ্যালয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা, এগারো টিতে সত্তর হাহার টাকা এবং একটিতে পুঁচাশি হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। বরাদ্ধের টাকা দুই ধাপে প্রতিষ্ঠান গুলোতে দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের টাকা থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ হিসেবে স্থায়ী ইনফ্রায়োড়/ নন কন্ট্রাক্ট থার্মেমিটার, স্প্রে মেশিন,ব্লিচিং পাউডার,মাস্ক,হ্যান্ড স্যানিটাইজার,সাবান,জগ,মগ ও বালতি সহ অন্যান্য সামগ্রি কয় করা হবে।
গত ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বন্ধ হওয়া স্কুলগুলো চলতি বছরের ৩০ মার্চ চালু হওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এজন্য গত ১০ মার্চ তড়িঘড়ি করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী রাজশাহীর “মাচইডুকিট” নামে একটি প্রতিষ্ঠান কে প্রোইান্টলিজেন্ট সেনসর সোয়াপ ডিস্পেন্সার মেশিন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্রয় করা হয়। যা প্রতিটি মেশিনের মূল্য ধরা হয় সাত হাজার টাকা এবং দুই হাজার মিলি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এর মূল্য ধরা হয় এক হাজার দুই শত টাকা। স্যানিটাইজার বোতলের মোড়কের গায়ে শুধুমাত্র হ্যান্ড স্যানিটাইজার লিখা থাকলেও কোম্পানির কোন নাম লিখা নাই।
অথাৎনামহীন কোম্পানির হ্যান্ড স্যানিটাইজার যা কোমলমতিত শিশুদের জন্য অনেকটা ঝুকি পূণ।ওই সময় ইন্টিলিজেন্ট সেনসর সোয়াপ ডিস্পেন্সার যে মেশিনটি ক্রয় করা হয়েছিল তার বাজার মূল্য চার হাজার আটশত টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা পযন্ত।নামহীন কোম্পানির হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মেশিন বাজারর থেকে তুলনা মূলক বেশি দাম দিয়ে ক্রয় অনেকটা অস্বচ্ছতা দেখা দিয়েছে।প্রথম ধাপের অর্ধেক টাকা দিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় নামমাত্র কেনাকাটা করে কতৃপক্ষের যোগসাজসে টাকাগুলো নয়চয় করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা অফিসের অধীনে চাকুরী করি। শিক্ষা অফিসার যে কোম্পানিরসাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন আমাদের সে কোম্পানির পন্য ক্রয় করতে বাধ্য হয়েছি।আর যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে বোতলের গায়ে কোন কোম্পানির নাম আছে দেখিনি। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও তা আর পরিবতন করা হয়নি।তবে স্প্রে মেশিনসহ আরও যে সব পণ্যওই কোম্পানি থেকে ক্রয় করার কথা ছিল তা নিজেদের ইচ্ছামতক্রয় করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান বলেন, কোন নামহীন কোম্পানির পণ্য সরবরাহ করা হয়নি। যাচাই-বাছাই করে নিদিষ্ট কোম্পানির মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। এ ছাড়া কোন অনিয়মের ঘটনাও ঘটেনি। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ) নওগাঁ জেলা সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন মকুল বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এটাকে মোকাবেলা করে সরকার যে ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল তা করা হয়নি। তার ওপর আবার নিন্মমানের সামগ্রী ক্রয় করা হয়েছে যেখানে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এর সাথে যারা জড়িত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করছি।