
মোঃ নূর ইসলাম নয়ন, দিনাজপুর :
নৌপরিবহন প্রতমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর শ্বশুর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলে ৮৬ বছর।
তিনি তিন ছেলে ও তিন মেয়ে সহ অসংখ্য ভক্ত, স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন। গত মঙ্গলবার দুপুর ২.৩০ মিনিটে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার বড়মাঠে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ৩টায় বোচাগঞ্জ উপজেলার দপচাই গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানা যায়, অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ ১৯৩৬ সালের ১ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম বিভাগে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে প্রথম প্রথম বিভাগে আই এ পাস করেন। ১৯৬২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করেন।
ওই বছরেই তিনি শিক্ষা আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য কারাবরণ করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৬৬ সালে জয়পুরহাট কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি অলীপুর কলেজ, নওগা কলেজ, ঠাকুরগাঁও কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে দিনাজপুর জেলা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯৯০ সালের পর আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশ্বাস ঘাতকেরা স্ব-পরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয় অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদকে।
এই মামলায় তিনি আড়াই বছর তিনি কারাগারে ছিলেন। ১৯৮২ সালে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে চাকুরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি বোচাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৯০ সালে পুনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে ১০ বছর অধ্যক্ষ ছিলেন। অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। ছিলেন স্পষ্টভাষী ও স্বাধীনচেতা।
তিনি তাঁর নিজ এলাকায় স্কুল, কলেজ সহ অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শেষ জীবনে নিজ বাড়িতে জ্ঞান মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করে যুবকদের জ্ঞান দান করে সময় কাটিয়েছেন।
অসাধারণ এই সৃষ্টিশীল মানুষের কর্মময় জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন স্বরূপ তাঁর নামে বোচাগঞ্জ উপজেলায় গণগ্রš’াগার রয়েছে।