
জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানের মৃত্যু দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত ।মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। সাতক্ষীরা বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো হত্যা মামলায় রায় মাত্র ২০ কার্যদিবসে ঘোষণা হলো।
সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ পীরগঞ্জ নিউজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতেন রায়হানুর রহমান।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনো কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি তাকে তালাক দেন স্ত্রী। সংসারে টাকা দিতে না পারায় দেবরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতেন শাহীনুরের স্ত্রী। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানাকে (৮) পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান রায়হানুর রহমান।
পরদিন ভোরে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এ সময় তাদের চারমাসের শিশু মারিয়াকে মরদেহের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তে নেমে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
২১ অক্টোবর আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবান বন্দি দেন রায়হানুর । ওই বছরের ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম রায়হানুরের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর আজ রায়হানুরের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।