Subscribe our Channel

তেঁতুলিয়ায় দলিল রেজিস্ট্রি’র কাজ চলে সাব-রেজিস্ট্রারের পার্সোনাল রুমে !
 মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় জেলাধীন তেতুলিয়া উপজেলায় জমি ক্রেতা-বিক্রেতার দলিল রেজিস্ট্রি’র কার্যক্রম চলছে সাব-রেজিস্ট্রারের পার্সোনাল রুমে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এজলাসকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবং প্রাণঘাতি করোনা এই মহামারি প্রতিরোধে সরকারি বিধিনিষেদকে তোয়াক্কা না করেই দেদারছে চলছে জমি রেজিস্ট্রি’র ধুম।
মুখে মাস্ক ছাড়াই জমি দাতা-ক্রেতা ও রেজিস্ট্রি অফিসার নিশাদুর রহমান এইভাবে করছেন জমি রেজিস্ট্রি। এতে বেশ কয়েকজন জমি ক্রেতা বিক্রেতা বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলে ধরেন। জমি দাতা-ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বলেন, এজলাসে জমি রেজিস্ট্রি হয় না, রেজিস্ট্রি অফিসারের পার্সোনাল রুমে হয়। তারা আরোও বলেন, তেঁতুলিয়া রেজিস্ট্রি অফিসে চলছে নানা অনিয়ম। দেখার কেউ নেই।
জানাযায়, অনিয়মের আতুড় ঘর এই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল প্রতি টিপসই দিতে লাগে ২’শ ৫০ টাকা, দলিল এন্ট্রি করতে অফিস সহকারী বেগম রোকেয়াকে দিতে হয় দলিল প্রতি ১’শ টাকা এবং অফিস খরচ দিতে লাগে ৫’শ টাকা সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার টাকা ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না উপজেলাবাসী। ভুুক্তভোগিরা জানান, জমি রেজিস্ট্রি করতে ক্রেতাকে নিজের টাকায় স্ট্যাম্প কিনতে হয়।
সোনালী ব্যাংকে ট্রেজারী চালান বাবদ স্ট্যাম্প শুল্ক ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, আয়কর ফি এবং এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ এ স্থানীয়করসহ কোর্ট ফি দিতে হয়। ভুক্তভোগিরা আরোও বলেন, সকল ফি আদায় করার পর দলিলটি পাশ করা হলে নিচের টেবিলে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এছাড়া দলিল লেখকরা সাব-রেজিস্ট্রারের জোগসাজসে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের রেজিস্ট্রেশন আইনের রেজিস্ট্রেশন ফি কে তোয়াক্কা না করে নিজের মনগড়া হিসেব দেখিয়ে দলিল প্রতি যুক্তিতে আবদ্ধ করেন।
প্রানঘাতি এই করোনা মহামারির জন্যে সরকার রেজিস্ট্রেশন ফি সাব কবলা দলিলের ক্ষেত্রে সাড়ে ৬ পারসেন করলে দলিল লেখকরা সাব-রেজিস্ট্রারের জোগসাজসে আগের হিসেব ধরিয়ে টাকা আদায় করছেন। এ বিষয়ে উপজেলার ভজনপুর ইউপির সর্দারপাড়া মৌজার জমি ক্রেতা পোহাতুগছ গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুস সালাম জানান, তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট ২০২১) ৭০ হাজার টাকা মুল্যের ৬শকত জমি রেজিস্ট্রি করতে তার ১০হাজার টাকা খচর হয়েছে। তিনি বলেন, দলিল লেখকের সঙ্গে যুক্তির ভিত্তিতে দলিলটি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, একটি দলিল করতে কত খরচ হবে সে কিছুই জানেন না। তাছাড়া বর্তমানে কোন দলিলে কত হারে খরচ ধরা হয়েছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে লক্ষ্য করলে কোনো সাইনবোর্ড কিংবা নোটিশের বালাই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে অফিস স্টাফের সাথে কথা হলে বলেন, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেননা অফিসার জানেন। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম-এর চাচার সঙ্গে রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে সাব রেজিস্ট্রার অসাধাচরন করেন। ইহাতে ওই সাংবাদিকের সম্মানহানী হয়েছে জানিয়েছেন। উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শামসুল হককের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার জন্য কল দেওয়া হলে তিনি তার মুঠোফোনে প্রেরিত কলটি রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার নিশাদুর রহমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি সাংবাদিকের প্রশ্নোত্তর না দিয়ে একঘেয়ামিভাবে তার পার্সোনাল রুমে দলিল রেজিস্ট্রির কার্যক্রম চালিয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *