Subscribe our Channel

কনকনে শীতে কাঁপছে মিরসরাই

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশার কারণে সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। রাত থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন, দিনে হিমেল বাতাসে কনকনে ঠান্ডা। এতে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।শনিবার (১৩ জানুয়ারি) মিরসরাইয়ে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। পৌষের শেষে এসে প্রচণ্ড কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ছিন্নমূল মানুষ। ব্যাপক ঠান্ডার কারণে গত কয়েকদিন কোনো কাজ মিলছে না দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের। রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজির চালকরা ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজ-কর্ম করলেও অন্যদিনের তুলনায় তাদের আয় কম। কারণ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। রাস্তায় মানুষের উপস্থিত একেবারেই কম।এদিকে বছরের শুরুতেই স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও একেবারে কম। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।মিরসরাই সদরে শ্রমিকের কাজ করেন ষাটোর্ধ্ব শাহাজাহান। ট্রাক ও পণ্যবাহী গাড়িতে যে যত কাজ করবে, তার ততো আয়।

সারাদিন কাজ করে আয় হয় পাঁচ-ছয়শো টাকা। কিন্তু আজ কোনো কাজই নেই।ভ্যানচালক দিদারুল আলম বলেন, শীতে ঘর থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। যদিও দুপুরের দিকে বের হই, কিন্তু ভাড়া পাওয়া যায় না আগের মতো।মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, তীব্র শীতের কারণে জমিতে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। অনেক কষ্টে শাকসবজির পরিচর্যা করছি। শীতের কারণে আমার ৪টি গরু ও ৮টি ছাগলের অনেক কষ্ট হচ্ছে।অভিভাবক কার্তিক দে বলেন, এত বেশি শীত পড়ছে যে সকালে বাচ্চা স্কুলে যেতে চায় না। মনে হচ্ছে এবার শীতের তীব্রতা বেশি। স্কুলের ক্লাস সকাল ৯টার পরিবর্তে ১০টায় শুরু হলে ভালো হতো।অপরদিকে প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, বমি, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে শিশুর সংখ্যা বেশি থাকে। গত কয়েকদিনে হাসপাতালে বেশ কিছু রোগী ভর্তি হয়েছে। বেশিরভাগ ডায়রিয়া আক্রান্ত। অনেকে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে।তিনি আরও বলেন, এই শীতে শিশুদের প্রতি বেশি যত্ন নিতে হবে। এ বিষয়ে মা-বাবার সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।মিরসরাইয়ের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন জানান, কয়েকদিন ধরেই মিরসরাইয়ে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। আমরা উপেজলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে, রাস্তার ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতের কম্বল দিয়ে আসছি। এছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমেও বিতরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *