Subscribe our Channel

চুয়াডাঙ্গায় দাবদাহের মধ্যে হাসপাতালে হাঁসফাঁস অবস্থা রোগীদের

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। একটানা কয়েক দিন তীব্র দাবদাহে জেলা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের হাসপাতালের বারান্দা ও করিডরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এছাড়া জীবননগর ও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও অনেক।তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে প্রায় তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন স্বাভাবিক রেট। লোকবল, চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে রোগী দেখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদেরচুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। আর বহির্বিভাগেও চিকিৎসা নিয়েছেন শত শত রোগী।রোববার (২১ এপ্রিল) হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ১২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে ৫১ জন ও মহিলা ওয়ার্ডে ৭৮ জন। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৫২ জন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ২৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

এর আগে থেকেই হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ৮৫ জন। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশু।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, শয্যা সংখ্যার কয়েকগুণ বেশি রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।মাজেদা খাতুন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, প্রচণ্ড গরমে হাসপাতালে রোগী নিয়ে থাকাটা কষ্ট। তারওপর আবার হাসপাতালের ফ্যান নষ্ট।নাম না প্রকাশ করে এক শিশুর বাবা বলেন, এই গরমে আমার বাচ্চাটা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এক ডাক্তারের চেম্বারে দেখানোর পর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখানে এক রুমের মধ্যে ৫০-১০০ জন মানুষ। খুব গরম। তার ওপর ডাক্তারও আসছে না। খুব কষ্টে আছি।চুয়াডাঙ্গার দর্শনার কুকিয়া চাঁদপুর গ্রাম থেকে আসা মিনারুল জানান, হাসপাতালে কোনো কিছু ঠিক নেই। গরমের মধ্যে এসেছি, আরও গরম লাগছে। খুব বাজে অবস্থায় আছি।জব্বার মিয়া নামের আরেক রোগী জানান, গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আবার একটু হার্টের প্রবলেম আছে। গরম না কমলে বেঁচে থাকা খুব কষ্টের।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এ সময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান বলেন, তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে সদর হাসপাতালে গরমজনিত রোগীর চাপ স্বাভাবিক পর্যায়ে আছে। হয়ত কয়েক দিন পর থেকে বাড়তে পারে।তিনি আরও বলেন, আমার হাসপাতালে আগে থেকেই নার্স-ডাক্তার ও লোকবল সংকট রয়েছে। যার ফলে রোগীর চাপ স্বাভাবিক থাকলেও হিমশিম অবস্থা কিছুটাতো হচ্ছেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *