Subscribe our Channel

আটোয়ারীতে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ 

আব্দুল করিম আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ‘ রাধানগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’-এর প্রধান শিক্ষক মোঃ আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া সহকারী শিক্ষক(মৌলভী) মোঃ মোস্তফা কামাল। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পড়ালেখা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়টির বেশ সুনাম ছিল। কয়েক বছর যাবত প্রধান শিক্ষক  সরকারি বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারীভাবে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেন ব্যাংক ব্যবস্থার সাথে সংগতি না রেখে উপার্জিত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে মনগড়া আয়-ব্যায়ের হিসাব তৈরী করে। অভিযোগ পত্রে উদাহরণ সরুপ উল্লেখ করেছেন,(১) শিক্ষার্থীদের নিকট হতে আদায়কৃত পরীক্ষার ফি, ভর্তি ফি,সেশন চার্জ, প্রশংসা পত্র প্রদান সহ যাবতীয় আয়ের অর্থ দীর্ঘদিন যাবত বিনা রশিদে আদায় করেছেন । আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে বিধি বহির্ভুতভাবে ব্যয় করেছেন।(২) বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ তৈরীর কথা বলে ৮০ হাজার টাকার গাছ কর্তন করে বিক্রি করেন। অথচ বেঞ্চ তৈরী করা হয় নাই।(৩) বিদ্যালয়ের নামে কবলাকৃত ৫০ শতক জমি গোপনে ইজারা দিয়েছেন। যার অর্জিত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে প্রধান শিক্ষক সমুদয় অর্থ আত্মসাত করে আসছেন।(৪) বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুর ও সুপারী বাগান প্রচার ছাড়াই গোপনে ইজারা প্রদান করেন। যার অর্জিত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছেমত ব্যয় করেন।(৫) বিগত ম্যানেজিং কমিটি গঠনে দাতা সদস্যগণের নির্ধারিত প্রদত্ত অর্থ ব্যাংকে জমা না করে প্রধান শিক্ষক আত্মসাত করেন। (৬) বিদ্যালয়ে সততা স্টোর চালু করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) কর্তৃক প্রদত্ত ১৯,৩০০/- টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাত করেন।(৭) সরকার প্রদত্ত টিউশন ফি বাবদ সমুদয় অর্থ প্রধান শিক্ষক আত্মসাত করেন।(৮) বিদ্যালয়ে পিয়ন পদে চাকুরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রাধানগর গ্রামের মৃত সুধির চন্দ্রের পুত্র ধনেশ চন্দ্রের নিকট প্রায় ৪লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক গ্রহণ করে আত্মসাত করেন।(৯) বিদ্যালয়ের দক্ষিণ সীমানা প্রাচীর ও শ্রেণি কক্ষের ওয়াল বহিরাগত দোকানদারদেরকে দোকান ঘরের ওয়াল হিসেবে অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেন। অভিযোগকারী শিক্ষক বলেন,  আমি নিজেই ম্যানেজিং কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি থাকাকালীন গত ১০/০২/২০২০  তারিখে কমিটির এক সভায় বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে প্রধান শিক্ষককে অনিয়ম,দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা হতে বিরত থাকার কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে এব্যাপারে নাক গলাতে নিষেধ করেন। তখন থেকে তিনি আর কমিটির সভা আহবান করেন নাই। গত ১৪/০৮/২০২১ হতে নিয়মিত কমিটির মেয়াদ শেষ হলে প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের সদস্য নির্বাচন করে বারবার এ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। এরপর হতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তৈরী করে মানসিক নির্যাতন সহ অমানবিক আচরণ শুরু করে। আমার প্রয়োজনীয় ছুটি মঞ্জুর না করে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত লিখে বারবার বেতন কর্তন করেন।

শেষ পর্যন্ত গত ১২/০৫/২০২৩ তারিখ হতে আমাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করেন। অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ে  সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি  প্রকাশ করা হয়। প্রধান শিক্ষক প্রতিটি পদের জন্য একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। সহকারী শিক্ষক ( মৌলভী) মোস্তফা কামাল বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের স্বার্থে অভিযোগ সঠিক ও নিরপেক্ষতার সাথে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। সকল অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আয়ুব  আলী বলেন, মৌলভী শিক্ষক মোস্তফা কামালকে বিধি মোতাবেক চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *