
মাহাবুব আলম,রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে গবাদি পশু গরু’র লাম্পি স্কিন রোগ(এলএসডি)। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। এ রোগের চিকিৎসা করেও কাঙ্খিত ফলাফল হচ্ছে না।প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে মারা যাচ্ছে গরু। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সচেতনতা ও পশু পালনকারীদের রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয় নিয়ে তেমন কোন প্রচার প্রচারনা নেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অনেক এলাকায় অভিযোগ রয়েছে এ রোগের বিষয়ে খোঁজ খবর প্রযর্ন্ত নেন না প্রাণী সম্পদ দপ্তর। জানা গেছে, বিগত কয়েক মাস ধরেই এ উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এর ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। আক্রান্ত হচ্ছে শত শত গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে গরু। বড় গরুর থেকে ছোট ধরনের গরু বেশি আকান্ত্র হচ্ছে। ছোট আকারের গরু গুলোই বেশি মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এ যাবত প্রায় শতাধিক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই খুটিয়াটুলি গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, এ রোগের আক্রান্তের গরু শরীরে অত্যন্ত দুর্গন্ধ ছড়ায়। তিনি তার খামারের একটি আক্রান্ত গরুর অনেক চিকিৎসা করে কোন প্রতিকার না পেয়ে গরুটিকে জবাই করে মাটিতে পুতেঁ দিয়েছেন ।
একই এলাকার মুনসুর আলী (মন্টু) বলেন ,তার বাড়ির ছোট একটি বাছুরের লাম্পি রোগ দেখা দিয়েছে । গরুটির বর্তমানে খারাপ অবস্থায় রয়েছে,যে কোন সময় মারা যাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামে আরেক গরু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলেও পশু হাসপাতালের কাউকে আমাদের গ্রামে আসতে দেখলাম না। কেউ খোঁজ প্রযর্ন্ত নিলো না গরুগুলোর। একাধিকবার উপজেলা প্রাণী সম্পদে জানালেও তাঁরা গ্রামের গুরগুলোর কোন খোঁজ নেন নি। একই এলাকার মফিজুল ও আকতার হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িতে কয়েকটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করে বর্তমানে একটু ভালো রয়েছে। তবে সরকারী কোন চিকিৎসক ডেকেও না পেয়ে বে সরকারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এখন গরু গুলো একটু সুস্থের দিকে। বনগাঁও রানীদিঘী গ্রামের পান দোকানি ইউনুস আলীর বাড়িতেও দুটি বাছুরের এই রোগ চরম ভাবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ঠিক মুখটাকে ঘিরে ফক্স এর মত উঠেছে গরু মুখ দিয়ে খেতে পারছে না। আক্রান্ত গরুটি না খাওয়ার জন্য খুব খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ী গ্রামের মাহাবুব আলম বলেন,আমার একটি গরু এই রোগে মারা গেছে, তিনি অভিযোগ করে বলেন,উপজেলা প্রাণিসম্পদ থেকে কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা এবং চিকিৎসভা বা ভ্যাকসিন নেই। জানতে চাইলে রানীশংকৈল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক মৌসুমী আকতার জানান, বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতাবোধ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এটি সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের উপজেলায় রোগটি নিয়ন্ত্রণে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রায় প্রতিদিনই ভেটেরিনারী হাসপাতালে অসংখ্যা গরুর চিকিৎসা দিচ্ছি।