
জেলা প্রতিনিধি(রাজশাহী) : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের (রাবি) রেলপথ অবরোধ ও লাইনে গাছের গুঁড়ি দেওয়ায় ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সারাদেশ থেকে ৬টি ট্রেন রাজশাহী স্টেশনে প্রবেশ ও ত্যাগ করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে চারুকলার রেললাইনে অবস্থান নেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে ট্রেন লাইনের ওপর গাছের গুঁড়ি দিয়ে আগুন ধরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে তারা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন।এদিকে রাত পৌনে ১১টার দিকে স্টেশন থেকে রাবি শিক্ষার্থীরা সরে আসলে রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তারা লাইন মেরামত শুরু করেন।স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় রেলপথে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজশাহীর সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে বেশ কয়েকটি যাত্রাবাহী ট্রেন।
রাজশাহী রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আব্দুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা রেললাইনে দুটি পয়েন্টে গাছের গুঁড়ি রেখে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মধুমতি এক্সপ্রেস রাজশাহী ঢুকতে পারছে না। ট্রেনটি হরিয়ান স্টেশনে আটকে আছে। এছাড়াও খুলনা থেকে আসা সাঁগরদাড়ি আড়ানিতে ও মহানন্দা ট্রেন ইশ্বরদীতে আটকে আছে। আর চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা তিতুমির আটকে আছে আব্দুলপুরে।তিনি বলেন, রাত সোয়া ৯টায় বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ট্রেনটি এখনও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করছে। এছাড়াও রাত ১১টা ২০ মিনিটে ধূমকেতু এক্সপ্রেসের ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।বর্তমান শিক্ষার্থীরা রাত পৌনে ১১টার দিকে রেললাইন থেকে সরে যায়। পরে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভায়। এদিকে রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তারা লাইন মেরামতের কাজ করছেন। আগামী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। তবে এই বিলম্ব কাটতে দুই থেকে ৩ দিন সময় লাগবে বলে আব্দুল করিম জানান।এদিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন সময়মতো ছাড়াতে না পারায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মশা আর বসার জায়গা সংকটের কারণে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে।রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ধুমকেতে এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে আমার ঢাকায় জরুরি কাজ আছে। কিন্তু ট্রেন ছাড়বে দেরিতে। কাল আমার কাজের কী হবে জানি না।তিনি বলেন, কিছু হলেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে সেটা ঠিক আছে। কিন্তু সেই আন্দোলন যদি মানুষের ভোগান্তির কারণ হয় তাহলে তাদের শান্তি দেওয়া উচিত।স্টেশনের প্রধান ফটকের পাশে ওয়েটিং চেয়ারে বসা আব্দুল মজিদ। বাবার পাশে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলে কুরবান আলী। তিনি বলেন, মশার কারণে বসতেও পারছি না। এদিকে ট্রেন যে কখন ছাড়বে জানি না। বাবা অসুস্থ। এখানে বসে আরও অসুস্থ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।এর আগে শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রণক্ষেত্র ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস ও বিনোদপুর এলাকা। পরে ওইদিনই বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।