
নিজস্ব প্রতিবেদক : পানি উন্নয়ন বোর্ড বা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ঠাকুরগাঁও শহরের টাঙ্গন নদীর ব্রিজের পাশ থেকে আবারও অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর আগেও ব্রিজের পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে ব্রিজের রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহরের টাঙ্গন ব্রিজটি রয়েছে ঝুঁকিতে।বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহরের টাঙ্গন নদীর ব্রিজের নিচে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। পাশের সাব-রেজিট্রি অফিসের পেছনের খাল ভরাট করার জন্য এই ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে। ড্রেজার বসানোর অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তারা মাটি ভরাট করার একটি কাগজ দেখান। যেখানে উল্লেখ রয়েছে যে, নদীর পাড়ে বিদ্যমান বালি দিয়ে সাব-রেজিট্রি অফিসের পেছনের খাল ভরাট করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা ড্রেজার বসিয়ে বালু দিয়ে খাল ভর্তি করছে।স্থানীয়রা সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গন নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসলেও এরা বরাবরই রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিষয়টি বার বার প্রশাসনকে অবহিত করার পরও কাজের কাজ কিছুই হয়না বরং বালু সিন্ডিকেটরা বেপরোয়াভাবে তাদের বালু উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

যে কারণে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীর পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ, ঘরবাড়ি, গাছপালা, জায়গা জমি হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়।নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দ্বারা ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, রেললাইনসহ মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ বালু দস্যুরা সরকারি আইন অমান্য করে সেতুর কয়েক গজ দূর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।ঠাকুরগাঁও মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, মাটির নিচ থেকে কাদা বালু উত্তোলন করা হলে ভূমির উপরিভাগ ঠিক থাকলেও তলদেশের ব্যাপক জায়গা নিয়ে ফাঁকা হয়ে যায়।
এভাবে প্রতিনিয়ত চলতে থাকলে বড় বড় স্থাপনা, রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক এলাকা দেবে যেতে পারে। এটা পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি।এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদেরকে জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান সাংবাদিকদেরকে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।