Subscribe our Channel

সিঙ্গাপুরে অসময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বিশ্বের জন্য অশনিসংকেত

সংগৃহীত ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিঙ্গাপুরে প্রায় প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তবে এ বছর সেই সময়ের অনেক আগেই শুরু হয়েছে এডিস মশার প্রকোপ। তার চেয়েও আশঙ্কা কথা, মৌসুম শুরুর আগেই গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। ফলে কিছুদিন পরে কী পরিস্থিতি হবে, তা রীতিমতো ভয় জাগাতে শুরু করেছে সিঙ্গাপুরে।সিএনএনের খবর অনুসারে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দেশটিতে ২০২১ সাল জুড়ে মোট ৫ হাজার ২৫২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরে এরই মধ্যে ১১ হাজারের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন।বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই পরিস্থিতি শুধু সিঙ্গাপুরের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী বছরগুলোতে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব আরও নিয়মিত হয়ে উঠতে পারে।ডেঙ্গু কোনো ছোটোখাটো রোগ নয়। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গ, যেমন- তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে ব্যথা দেখা দেয়।
গুরুতর অবস্থায় রক্তপাত, শ্বাসকষ্ট, অঙ্গহানি, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেসমন্ড ট্যান বলেছেন, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি পর্যায়ে চলে গেছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়েছে। তাদের সমস্যাটি অন্যদের জন্যেও সতর্কসংকেত হতে পারে। কারণ, আরও অনেকে দেশ দীর্ঘায়িত উষ্ণ আবহাওয়া ও বজ্রবৃষ্টির সম্মুখীন হয়, যা মশা এবং ভাইরাস উভয়কেই ছড়াতে সহায়তা করে।গত জানুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি বৈশ্বিক ডেঙ্গু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি এখন ১০০টিরও বেশি দেশে আঞ্চলিক রোগের রূপ নিয়েছে।
গত ৫০ বছরে সংক্রমণ ৩০ গুণ বেড়েছে। ডেঙ্গু এখন নতুন নতুন এলাকায় ছড়ানোর সঙ্গে কেবল রোগীর সংখ্যাই বাড়ছে না, বিস্ফোরক আকারে প্রাদুর্ভাবও ঘটছে।ডব্লিউএইচও’র তথ্যমতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে রেকর্ড ৫২ লাখ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওই বছর এশিয়াজুড়ে প্রাদুর্ভাবের কারণে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। ফিলিপাইনে ডেঙ্গুতে শত শত প্রাণহানি হয়, আরও লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকিতে পড়ে।
দেশটি এটিকে জাতীয় মহামারি ঘোষণা করেছিল। একই সময় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আর আফগানিস্তানে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়।এর পরের বছরই সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে ভয়াবহতম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ২০২০ সালে নগররাষ্ট্রটিতে ৩৫ হাজার ৩১৫ জন এ রোগে আক্রান্ত হন, মারা যান অন্তত ২৮ জন।এ বছর সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত মাত্র একজন ডেঙ্গুতে মারা গেলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *