Subscribe our Channel

পঞ্চগড় চুন সুরকিতে তৈরি ঐতিহাসিক মসজিদ

আছমা আক্তার আখি  :

 

পঞ্চগড় শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন এর মির্জাপুর বাজারের একটু পুর্বপাশের এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পঞ্চগড় মির্জাপুর প্রাচীন নির্দশন হিসেবে দারিয়ে আছে মসজিদটি।

 

 

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনেই দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন।

 

পাকা স্থাপনাটি নির্মান করা হয়েছিল বাংলা ১২৪৮ সনে (১৮৪১ খ্রিস্টাব্দ) । এর মাঝে পার হয়ে গেছে দীর্ঘ ১৮১ টি বছর। মসজিদটির গায়ে আরবি হরফে লেখা ফলক দেখে প্রাচীন নিদর্শনটির বয়স সম্পর্কে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাচীন এই মসজিদটি আজও নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। সেখানে এখনো নিয়মিত নামাজ আদায় করাহয়।

 

 

মির্জাপুর গ্রামে মোঘল যুগের এই মসজিদটি মোঘল রাজার আমলে নির্মিত হয়।তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি চুন- সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি। মজিদের ভেতরে কারুকার্যখচিত অসংখ্য নকশা রয়েছে।

 

 

 

বিশেষত্ব হলো একটি নকশার সঙ্গে আরেকটির কোনো মিল নেই। শুধু তাই নয়, ১৪ জন রাজমিস্ত্রি দীর্ঘদিন কাজ করে মসজিদটি নির্মাণ করেন।যাদের সবাই ছিল অচেনা।

 

 

১৪ জন রাজমিস্ত্রি কাজ করলেও খাওয়ানোর সময় খুঁজে পাওয়া যেত ১৩ জন মিস্ত্রিকে। তারা সবাই লম্বা এবং একই রকম দেখতে হওয়ায় খাওয়ার বাদ পড়া একজনকে খুঁজে বের করা যেত না।

 

 

লোকজনের ভাষায় তারা বিশ্বকর্মা নামে অভিহিত ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, তাদের পুর্ব পুরুষের কাছে শুনেছেন মসজিদটির নির্মনকাজে ব্যবহৃত চুন-সুরকি, ইট ও ঘিয়ে ভাজা মশল্লা দিয়ে ।

 

 

 

বিশেষ করে নকশাগুলো তৈরির পর তা বিশাল আকৃতির একটি করাইয়ে ঘি ঢেলে তাতে ভেজে নেওয়া হতো। দীর্ঘ সময় সেই কড়াই মসজিদ নির্মাতাদের উত্তরসুরিরা সংরক্ষণ করলেও এখন তা আর চোখে পরেনা, দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ আজও মানুষকে মোহিত করে।

 

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মির্জাপুর গ্রামে পাকা রাস্তার পাশে দৃষ্টি নন্দন এই মসজিদটি অবস্থিত। ৫২ ফিট দীর্ঘ ও ২১ ফিট প্রস্থ বিশিষ্ট এই মসজিদের ছাদে রয়েছে তিনটি গম্বুজ ।

 

 

যার মাথায় রয়েছে ৪ ফিট উঁচু নকশা। মসজিদের প্রবেশ পথে রয়েছে গাম্ভির্যপুর্ণ তরণ।

 

মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে সুউচ্চ আযানের মিনার। মসজিদটির ৪ কোনায় ৪ টি এবং পুর্ব পশ্চিমের মাঝখানে ছোট আকারের ৪ টি গম্বুজ।ভেতরের গাঁথুনিতে রয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকের নকশা।

 

 

 

মসজিদটির গঠন শৈলী দেখে মনে হয় এটি মোঘল আমলের স্থাপত্যকলা অনুসরন করা হয়েছে।

 

 

বর্তমানে মূল মসজিদ ঠিক রেখে চলে মসজিদের কাজ।এ মসজিদ দেখার জন্য মাঝে মাঝে ভির জমায় দর্শনার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *