Subscribe our Channel

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের অনিয়মে কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি :

 

প্রিমিয়াম হার লঙ্ঘন করে বছরের পর বছর ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে মেরিন কাভারনোট ইস্যু করেছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। এতে কোটি টাকার বেশি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত সরকার। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) তদন্ত ও পীরগঞ্জ নিউজের অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

 

 

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রিমিয়াম হার লঙ্ঘন করে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের অনুকূলে মেরিন কাভারনোট ইস্যু করছে বলে গত এপ্রিলে তথ্য পায় নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মেরিনের ট্যারিফ মূল্য ধার্য করা হয়েছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং এই টাকার ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য।

 

 

 

ট্যারিফ মূল্য গোপন করায় প্রতিষ্ঠানটির বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এমন অভিমত দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের বিপরীতে গত তিন বছরের সব পলিসি বা কাভারনোট অনুসন্ধানের জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর গত ৭ জুন বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে আইডিআরএ ।আইডিআরএর পরিচালক ( উপ-সচিব) মো: আব্দুস সালাম সোনারের নেতৃত্বে তদন্ত দল ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের তথ্য তদন্ত করে গত ২২ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয়।

 

 

 

 

ওই তদন্ত প্রতিবেদনে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়ার হার লঙ্ঘন ও ভ্যাট ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে আসে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের অনুকূলে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স থেকে ২০১৮ সালে ১৩২টি, ২০১৯ সালে ১২০টি এবং ২০২০ সালে ৭৫টি মেরিন কাভারনোট ইস্যু করা হয়। প্রিমিয়াম হার লঙ্ঘন করে এ কাভারনোটগুলোর বিপরীতে সাত কোটি ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৩৩২ টাকা কম নেওয়া হয়।

 

 

 

 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে আইডিআরএকে চিঠি দেওয়া হয়। এতে সরকার এক কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার ৫৮৭ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আইডিআরএর তদন্ত দল বলছে, নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হারে প্রিমিয়াম আরোপ করে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স বিমা আইন ২০১০ এর ১৭ এবং ৬০ ধারা লঙ্ঘন করেছে। সেই সঙ্গে প্রিমিয়াম রেট লঙ্ঘন না করার জন্য ২০১১ সালে আইডিআরএর জারি করা নির্দেশনাও লঙ্ঘন করেছে বিমা কোম্পানিটি। এজন্য প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের মালিবাগ শাখা ব্যবস্থাপক, হেড অফিসের ব্রাঞ্চ কন্ট্রোল শাখা, অবলিখন শাখা, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) অনিয়মের সাথে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে বিমা আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে তদন্ত দল। এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর আগেও প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ট্যারিফ রেট লঙ্ঘন করেছে। সেখানে ট্যারিফ রেট ভায়োলেশনের (লঙ্ঘন) জন্য তাদের জরিমানা করা হয়।

 

 

 

 

 

এছাড়া ২০১৭ সালেও ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের বিপরীতে প্রিমিয়াম হার লঙ্ঘন করে মেরিন কাভারনোট ইস্যু করার তথ্য পাওয়া যায় প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে। তদন্তের বিষয়ে জানতে আইডিআরএর পরিচালক মো. আব্দুস সালাম সোনারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।এজন্য কোম্পানিটিকে একাধিকবার জরিমানাও করেছে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।

 

 

 

 

এর মধ্যে ২০১১ সালের ২৩ জুন ও ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালের ১ মার্চ, ৪ এপ্রিল ও ৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে শুনানিতে ডাকে আইডিআরএ। আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ এবং অফিসের টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে জানতে মেসেজ দেওয়া হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খানের সাথে পীরগঞ্জ নিউজ এক্সপ্রেসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার মেমোরিতে নেই। সুতরাং এটি না দেখে কিছু বলা যাবে না।

 

 

 

 

 

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেজাউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পীরগঞ্জ নিউজ এক্সপ্রেসকে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবহিত নই।

 

 

 

 

আইডিআরএ থেকে এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। সুতরাং এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *