
মোঃ তোতা মিয়া নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ে এ বছর কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে।গত বছরের চেয়ে ফলন অনেক বেশি হলেও সাম্প্রতিক লকডাউন ও বিধিনিষেধে বিক্রি কম হওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পরেন।সে অবস্থার পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে কাঁঠাল ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে কিছুটা হলেও লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন ব্যবসাইরা।জেলার বিভিন্ন স্থানে কাঁঠালের স্তুপ করে রেখে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকযোগে বিক্রির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
ফলে পাইকার ও ব্যবসায়ীরা তাদের পুঁজি নিয়ে শস্কার বিপরীতে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। অপরদিকে কাঁঠাল বাগান মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। এর ফলে ফলন বেশি হলেও অর্থনৈতিক গুরুত্ব হারাচ্ছে কাঁঠাল। গত বছর পঞ্চগড়ে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়, চাহিদা অনুযায়ী কাঁঠাল বিক্রি হয় ভালো। এতে করে ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারগণ পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁঠাল কিনে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশেও রপ্তানি করে।ওই সময় জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ও রাস্তাঘাটে কাঁঠালের হাট বসলেও সম্প্রতি করোনার কারণে সেভাবে হাঠ বসতে দেখা যায়নি।
তবে সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে কাঁঠালের হাট বসছে এবং কাঁঠাল ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহও হচ্ছে। এরই ধারাবাহিক তায় গত কাল সদর উপজেলার টেংগনমারী ফকিরের হাটে গিয়ে দেখা যায়, ব্যপারিরা ভ্যানগাড়িতে করে কাঁঠাল এনে রাস্তার ধারে জমা করছেন। তাদের জিজ্ঞেস কারলে তারা বলেন, পার্শ্ববতী গ্রাম আমার বাড়ি। প্রতিদিন ব্যবসায়ীদের প্রতি পিস কাঁঠাল ৩-৪ টাকা কমিশনে ট্রাকের সামনে এনে দেই। এতে করে প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ শ টাকা আয় হয়। আজকে সাড়ে ৩শ পিস কাঁঠাল কিনে এখানে এনেছি। একই এলাকার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জানাযায় প্রতি পিস কাঁঠাল গড়ে ৩০-৪০ টাকায় কিনছি। প্রতিদিন গ্রাম -গজ্ঞের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁঠাল কিনে এই হাটে ও রাস্তার পাশে স্তুপ করে জমাই। পরে সেখানে ট্রাক বঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। কিছুদিন কাঁঠালের দাম না থাকায় ও লকডাউন এবং বিধিনিষেধ থাকায় কাঁঠাল পাঠাতে পারি-নি।
বর্তমানে অল্প অল্প করে কাঁঠালের দাম ও বিক্রি অনেকটা বেড়েছে। আশা করছি এই এবারের ট্রাকের কাঁঠাল বিক্রি হলে ৫-৭ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। পঞ্চগড় সদর উপজেলার ফুলতলা গ্রামের কৃষক মোঃ আকবর আলী জানান, তার বাড়ি ও বাগানে প্রায় ৩০ টি কাঁঠাল গাছ রয়েছে। সেগুলো থেকে প্রত্যেক বছর তিনি ২০-২৫ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেন। এ বছর কাঁঠালের ফলন অনেক ভালো হলেও করোনার কারনে কাঁঠাল বিধিনিষেধ থাকায় এ পর্যন্ত তেমন কাঁঠাল বিক্রি করতে পারিনি।তবে বেশ কয়েকদিন ধরে কাঁঠাল কেনার জন্য পাইকাররা আসছেন এবং ভালো দামও বলছেন বলে জানান তিনি।
জেলার বেশ কয়েকজন কাঁঠাল পাইকার -ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জামা যায়, প্রত্যেক বছর তারা গাছে কাঁঠাল ছোট থাকাকলীন চুক্তিভিত্তিক বাগান কিনে থাকেন। পরৈ বেশি দামে তা বাজারে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। কিন্তু এ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়ৎদাররা কাঁঠাল কিনতে অনিহা প্রকাশ করায় আর্থিক দিক থেকে লোকশানের শস্কায় ছিলেন।তারা।অবশেষে নতুন করে কাঁঠালের দাম বাড়ায় আশায় বুক বাঁধছেন তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জানান এ বছর জেলায় ১৬০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ হয়েছে। দিন দিন এ জেলায় কাঁঠালের চাষ বৃদ্ধি পওয়ায় এবং তাছাড়া পঞ্চগড়ের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলন ভাল হয়ে থাকে। এতে করে কাঁঠালের দাম বেড়েছে। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন,কৃষক, পাইকার ও ব্যবসায়ীগণ।