Subscribe our Channel

রানীশংকৈল ভূমি অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমির খারিজ বাবদ অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

নাজমুল হোসেন, রাণীশংকৈল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার দুই ভুমি অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১৫ শতক জমির খারিজ বাবদ ১৬ হাজার ৩ শত পঞ্চম টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৭ এপ্রিল তিনি বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি অভিযোগ করেন এবং অভিযোগ সূত্রে জানা যায় রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই গ্রামের হবিবর রহমান নাইবুর ছেলে মোঃ সাদ্দাম আলী উপজেলা ভূমি অফিসে গত তিন মাস আগে ১৫ শতক জমির খারিজ করার উদ্দেশ্যে ভূমি অফিসে আসলে ভুমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার সাকিব উদ্দিন তাকে অফিসের বারান্দায় জমির কাগজ পত্র সহ দেখতে পেয়ে কি জন্য অফিসে এসেছেন বলে জিজ্ঞেস করে ভুক্তভোগী সাদ্দাম কে এসময় সাদ্দাম সরল মনে বলে আমি জমির খারিজ করার জন্য আসিয়াছি।

 

 

জমির খারিজ করার কথা শুনে তিনি সাদ্দামের পিঠের উপর হাত দিয়ে ভালো ব্যবহার দেখাইয়া তার অফিসে নিয়ে গিয়ে জমির দলিল আদি দেখে এবং বলে কত দিনের মধ্যে খারিজ লাগিবে খুব দ্রুত নাকি ৬ মাস। এসময় সাদ্দাম বলে খুব তাড়াতাড়ি লাগবে।তখন সাকিব উদ্দিন বলে আমি যা বলি মনোযোগ দিয়ে শোনো পরবর্তীতে সাকিব তার ব্যবহার তো খাতায় বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করিয়া সাদ্দাম কে বলে তোমাকে খারাজি বাবদ ১৮ হাজার টাকা দিতে হবে না হলে হবে না।এসময় সাদ্দাম ১৫ হাজার টাকা দিতে সম্মতি জানায়। তাৎক্ষণিক শাকিব সাদ্দামের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা বায়নামা স্বরুপ হাতিয়ে নেয় এবং অনলাইনে আবেদম করার কথা বলে আরো ২ শত টাকা নেই। সাদ্দাম আরও অভিযোগ করে বলেন শাকিব যখন-তখন রাস্তাঘাটে দেখা হলে বেনসন সিগারেটের প্যাকেট ও কিনে চাইতো তখন সাদ্দাম নিরুপায় হইয়া সিগারেট ও কিনে দিত এবং সাদ্দাম অফিসে ঘোরাঘুরি করলে বেশি অফিসে আসা যাবে না বলেও বাধা প্রদান করতো সাকিব।

 

 

অভিযোগে সাদ্দাম আরো বলেন এসিল্যান্ড স্যারের কাছে আমার জমির খারিজ দেরি হচ্ছে কেন বললে নাজির সাকিব উদ্দীন সাদ্দাম কে বলে এ্যাসিল্যান্ড স্যার সাধারণ মানুষকে পছন্দ তেমন একটা করেন না এসব বিষয়ে এ্যাসিলেন্ট স্যারকে বললে এক বছর ও কাজ হবেনা কারণ এ্যাসিলেন্ট স্যার মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয় না তিনি আমাদের মাধ্যমে টাকা নেই শাকিব সাদ্দামকে বিশ্বাস করার জন্য আরও বলে তোমার বিশ্বাস না হইলে তোমার টাকা যে আমি এ্যাসিলেন্ট স্যারের হাতে দিব সেটারও মোবাইলে ভিডিও করে তোমাকে দেখাবো তাহলে তো তোমার অবিশ্বাস হবে না আমাকে। পরবর্তীতে সাদ্দাম এ্যাসিনেন্ট কে টাকা দেওয়ার জন্য শেষ সম্বল ছাগল বিক্রি করে ৭ হাজার টাকা নিয়ে এসে নাজির মোঃ সাকিব উদ্দিনের হাতে বুঝে দেয় এ্যাসিলেন্ট কে দেওয়ার জন্য। এদিকে কাগজপত্র তৈরি হইলে অত্র ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হর্ষবর্ধন সিংহকে ৩হাজার টাকা দিয়ে তার খারিজে সই করার জন্য দিতে হবে এবং সাদ্দামকে আরো বাধা প্রদান করে যে কোথায় কত টাকা দিয়েছি সেটা যেন কাউকে না বলা হয়।

 

 

এদিকে সাদ্দাম ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হর্ষবর্ধন সিংহের কক্ষে গেলে তিনি কাগজে সই প্রদান করবেন না মর্মে গালিগালাজ করে ও ৫ হাজার টাকা দাবি করে পরে সাদ্দাম ৩হাজার টাকা দিয়ে কাগজে সই করিয়ে নেয়। এবং খাজনা চেক বাবদ আরও ১ হাজার ১ শত পঞ্চাশ টাকা প্রদান করিয়া পুনরায় উপজেলা ভূমি অফিসে আসলে সাকিব উদ্দিন সকল কাগজ হাতে নিয়ে নেয় এবং সাদ্দামকে বলে একটি বড় বেনশন সিগারেটের প্যাকেট এনে দাও।

 

 

পরে সিগারেটের প্যাকেট হাতে পেয়ে সাকিব উদ্দিন ভুক্তভোগী সাদ্দামকে বলে তোমাকে এখন এসিল্যান্ড স্যারের কাছে নিয়ে যাবো তবে তোমার কাছে কত টাকা নিয়েছি শুনতে চাইলে চাইলে তুমি বলবে শুধু আমার কাছ থেকে। তুমি বলবে খারিজের চেক কাটার জন্য শুধু টাকা নিয়েছে। আর তুমি যদি অতিরিক্ত টাকার কথা বল তাহলে তোমার কাজ এক বছরও হবে না।সাদ্দাম কে সাকিব উদ্দীন আরো একশত করে বলে যে ছিলেন স্যার কে টাকা দেওয়ার ভিডিও দাও তোমাকে আমি দেখাবো তোমার বিশ্বাস না হইলে। একসময় পরবর্তীতে সাদ্দাম জানতে পারে খারিজ করার জন্য মাত্র ১হাজার দুই শত পঞ্চাশ টাকার মধ্যেই হয়ে যায়।

 

 

একথা জানার পর সাদ্দাম ভূমি অফিসের নাজির মোহাম্মদ সাকিব উদ্দিন ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হর্ষবর্ধন সিংহকে অতিরিক্ত টাকার কথা কথা বলিলে তারা ভয় দেখিয়ে সাদ্দামকে বলে আমাদের হাতে এখনো ক্ষমতা আছে কোন কারন ছাড়াই তোমার খারিজ বাতিল করিয়া দিব মর্মে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায় সাদ্দামকে এদিকে ১৫ শতক জমির খারিজ করিতে ১৬ হাজার ৩ শত ৫০ টাকা খরচের কথা শুনে এলাকায় বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সাধারন জনগন ভুমি অফিসের এরকম দুনীতি থেকে রেহাই পেতে চাই। এ বিষয়ে উপ-সহকারি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হর্ষবর্ধন সিংহ বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং নাজির সাকিব উদ্দিন বলেন এরকম যদি কোন প্রমাণ থাকে স্যার কে দেখান মানুষ তো এত বোকা না যে কেউ কাউকে কথা শিখিয়ে দিতে হয়।

 

 

 

এ বিষয়ে সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) প্রীতম সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই বিষয়ে আমি গতকাল একটি অনুলিপি পেয়েছি তবে বিভাগীয় তদন্তে যে আদেশ আসবে সেভাবেই আমরা কাজ করবো।তিনি আরো বলেন আমি অভিযোগকারীর কে অফিসে ডেকে কথা বলেছি এবং পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে তাকে আবার ডাকবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *