Subscribe our Channel

নওগাঁর মহাদেবপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী তালপাতার হাতপাখা বিলুপ্তির পথে

কাজী সামছুজ্জোহা মিলন মহাদেবপুর (নওগাঁ)প্রতিনিধিঃ

১৮ এপ্রিল ২০২১ নওগাঁর মহাদেবপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম তালপাতার হাতপাখা এখন বিলুপ্তির পথে। এরপরেও জীবন-জীবিকার তাগিদে এখনো কিছু দৃশ্য দেখা যায় হাতপাখা কারিগরের হাতে।

 

ডিজিটাল যুগে হাতপাখার কদর এখন আর আগের মত নেই বললেই চলে। অথচ এক সময় মানুষের হৃদয় জুড়ানো গরমকে নিবারন করার, রাতে প্রশান্তির ঘুমের একমাত্র মাধ্যম ছিল হাতপাখা।

 

বাবা মায়েরা তাদের প্রিয় সন্তানদের রাতের বেলা ঘুমানোর সময় হাত পাখার বাতাসে ঘুমিয়ে দিত। কিন্তু কালের পরিবর্তনে এখন এ দৃশ্য আর আগের মত দেখা যায় না।

 

 

এই হাতপাখা তৈরি ও বিক্রির মাধ্যমে জীবন-জীবিকার উপকরণ হিসেবে বেছে নিয়েছেন অনেকেই। শনিবার ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের বকের মোড় এলাকায় চার্জার ভর্তি কাঁচা তালপাতার হাতপাখা দেখা যায়। এ সময় কথা হয় হাতপাখার কারিগর উপজেলার ভালাইন গ্রামের মৃত নজর আলীর পুত্র ছামেদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান প্রতিবছর ফাল্গুন চৈত্র মাসে প্রচন্ড রোদ ও গরম থাকে। এ সময় হাতপাখার ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যায়।

 

এজন্য এসময় জেলার বিভিন্ন উপজেলার বড় বড় তালগাছ থেকে তালপাতা নামিয়ে তিনি হাতপাখা তৈরি করে আসছেন। এগুলো তিনি ধামুইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন এলাকা থেকে তালপাতার হাতপাখা বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ এক যুগ এর অধিক সময় ধরে তিনি এ ব্যবসা করে আসছেন। তিনি আরো বলেন হাতপাখা গুলো এখন কাঁচা রয়েছে। এগুলো পুরোপুরি তৈরি হতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে।

 

এ চার্জার ভ্যানে ২৫০ টি তালপাতার হাতপাখা রয়েছে। প্রতিটি হাতপাখা বিক্রি হবে ২০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। ছামেদুল আরো জানান, আগের মতো আর তালপাতার পাখা বানানোর জন্য পাওয়া যায় না। কিন্তু ডিজিটাল যুগে গরম নিবারণের বিভিন্ন মাধ্যম থাকলেও প্রাকৃতিক ভাবে তালপাতার হাতপাখার কাছে সকলেই জিম্মি। অনেকেই হুমরি খেয়ে কিনতে আসেন। বিক্রিও ভালো। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছেন।

 

এসময় তালপাতার হাতপাখা কিনতে আসা আদিবাসী নেতা ও সাংবাদিক অসিত দাস বলেন, অনেকদিন থেকেই তিনি এ তালপাতার হাতপাখা খুঁজছিলেন। আগে যেখানে সেখানে পাওয়া গেলেও বর্তমানে আর সেগুলো ব্যাপক আকারে পাওয়া যায় না। গ্রাম বাংলার গরম নিবারন করার ঐতিহ্যবাহী মাধ্যম ছিল হাতপাখা।

 

এগুলোকে শিল্পে রূপ দিয়ে এর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জানান তিনি। এছাড়া তালপাতার হাতপাখা আজও কিনতে পারলেন না বলে হতাশ হয়ে পড়েন। আগামী দিনে পাবেন কিনা সে নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *