
জয়ন্ত রায়, বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ ডিজিটাল না হলে করোনার সময়ে বাংলাদেশ পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে যেত বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আজকে সব কার্যক্রম ডিজিটালি হচ্ছে। সবার হাতে হাতে ইন্টারনেট। কৃষকের ঘরে ল্যাপটপ। শিক্ষা কর্মসূচি, পাঠদান, চাকরির নিয়োগ সব অনলাইনে হচ্ছে। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জের সকল দুর্গাপুজামণ্ডপে সরকারি অর্থ বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে উল্লেখ করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত এই বয়সেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। যেভাবে বাংলার মানুষকে সাহসী করে গেছেন। বাংলাদেশের মানুষ তার নেতৃত্বের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে। এ রকম একটি সংকটের মধ্যেও একটি জনবহুল দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক মুহূর্তের জন্য বিচলিত হতে দেখিনি। সব সময় তিনি বাংলার মানুষকে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম যখন করোনা আসলো, অনেকে আশঙ্কা করেছিল বাংলাদেশ একটি বিরান ভূমিতে পরিণত হবে। আমাদের তখন সেরকম প্রস্তুতি ছিল না। চিকিৎসার প্রস্তুতি ছিল না বলেই আমেরিকা ইতালিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। আমাদের চিকিৎসা আমেরিকা ইউরোপের মতো না। সচেতনতা ও সাহসের কারণে আমরা এখন পর্যন্ত করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। সমগ্র বাংলাদেশ দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। করোনার সময়েও আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের চেয়ে আমাদের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী। এটা আওয়ামী লীগ বা প্রশাসনের কথা না। এটা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কথা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আতঙ্ক ছড়ানো হল যে কূটনীতিক পাড়া খালি হয়ে গেছে। আমাদের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা চলে যাচ্ছে। টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে শত শত মার্কিন নাগরিক চলে যাচ্ছে। করোনা মহামারীর সময় সবাই যার যার দেশে চলে যেতে চাইবে এটাইতো স্বাভাবিক। না যেতে পারলেও চেষ্টা করবে। কিন্তু আতঙ্ক ছড়ানো হলো বাংলাদেশে বসবাসের কোন উপায় নাই। বিদেশিরা সব দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এখন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশ সফর করছেন। তার মানে বাংলাদেশ নিরাপদ। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারা দেখা করছেন। বাংলাদেশ সঠিক জায়গায় আছে। সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছিল। তা দ্রুত পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত বছর প্রতিটি পূজামণ্ডপে দেয়া হয়েছিল ১২ হাজার টাকা, এবার দেয়া হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়নি।
করোনার এ সময়ে জনসমাগম এড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এ রকম অবস্থায় উৎসব করাটা খুবই বেমানান। হাজার হাজার মানুষ, লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে আমাদের দেশে ও পৃথিবীতে। হাজার হাজার মানুষ এখনো আক্রান্ত আছে। এরকম অবস্থায় উৎসব করাটা খুবই বেমানান। আমাদের মনের উৎসব আছে। কারণ আমাদের এখানে শান্তি আছে। নিরাপত্তা আছে। মনের যে উৎসব এটাই প্রকৃত উৎসব।
খালিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা বেড়েছে। কৃষকরা সার পায়নাই, বিদ্যুৎ পায়নাই। এখন সব কিছু হাতের নাগালে। কারণ শেখ হাসিনার ব্যবস্থাপনা। মানুষ শান্তিতে আছে। বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন অস্থিরতা নাই। কিছু মানুষের, কিছু গোষ্ঠীর থাকতে পারে। সামগ্রিক অস্থিরতা নাই। বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন অস্থিরতা নাই। রাজনীতি এবং অর্থনীতি সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ ভাল আছে সঠিক পথে আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছন্দা পালের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সৈয়দ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফছার আলী, সেতাবগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুস সবুর, বোচাগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর ভদ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। পরে প্রতিমন্ত্রী উপজেলার ৮৪ মণ্ডপে নগদ অর্থ, কাপড় ও করোনা সামগ্রী বিতরণ করেন।