Subscribe our Channel

পীরগঞ্জের শহীদ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার ৫১ তম মৃত্যু বার্ষিকী

আবু তারেক বাঁধন, নিজস্ব প্রতিবেদক :

 

আগামীকাল ১৭ এপ্রিল শহীদ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার ৫১ তম মৃত্যু বার্ষিকী । তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার রঘুুুনাথপুর গ্রামে ১৯৩৯ সালের ২৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন । তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে এমএ পাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পীরগঞ্জ কলেজ বর্তমানে (পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন।

 

 

 

’৭১ এর ১৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা দুপুরে কয়েকটি জিপ গাড়ি নিয়ে পীরগঞ্জে প্রবেশ করে। প্রথমেই তারা তৎকালীন পীরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সুজাউদ্দীন আহাম্মেদের পূর্ব চৌরাস্তা ওষুদের দোকানে হানা দেয়।

 

 

 

 

পরে তাকে মারধর করে গাড়িতে তুলে এবং দোকানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পূর্ব চৌরাস্তার পাশ থেকে অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাকে আটক করা হয়। অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা তখন মুক্তি সংগ্রাম কমিটি গঠন করে তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পরে শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জব্বার মহাজনসহ বেশ কয়েকজন নীরিহ লোকের ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যায়।

 

 

 

ওই দিন বিকালে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাও পাকা সড়ক লোহাগাড়ার জামালপুর (ভাতারমারি) ফার্ম নামক স্থানে গোলাম মোস্তফাসহ অন্যদের ব্যানয়েট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে যায়। এ থেকেই শুরু হয় গণহত্যা।

 

 

জামালপুর (ভাতারমারি) ফার্ম থেকে অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার দেহাবশেষ নিয়ে এসে পীরগঞ্জ পৌর শহরের রঘুনাথপুর রেলক্রসিংয়ের পূর্বে সমাহিত করা হয়। সে সময় পীরগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এ বুদ্ধিজীবী। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ১৯৯৩ সালে অধ্যাপক গোলম মোস্তফার নামে স্মারক ডাক টিকিট বের করে।

 

 

 

১৯৯১ সালে শহীদের স্ত্রীর পক্ষে পীরগঞ্জ থানার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ারা মোস্তফার হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেন সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে অনারম্বর সম্মাননা দেওয়া হয়।

 

 

 

বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত স্মৃতি ১৯৭১ এর তৃতীয় খ, অক্সফোর্ড এটলাসসহ বিভিন্ন বইয়ে তাকে নিয়ে বহু প্রবন্ধ ছাপা হয়। শহীদের স্মরণে পীরগঞ্জ থেকে বোচাগঞ্জ উপজেলা অভিমুখী সড়কটি “শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সড়ক” নামে নামকরণ হয়। ।

 

 

 

শহীদ বুদ্ধিজীবীর রাষ্ট্রীয় তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর তার সমাধিস্থল সংস্কার করে রাষ্টীয় উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

 

 

 

শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার ছেলে অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, শহীদের আত্নার মাগফিরাত কামনায় পৌর শহরের রঘুনাথপুরের নিজ বাড়িতে বাদ আশর কোরআন তেলোয়াত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *