Subscribe our Channel

নওগাঁয় কমছে ফসলি জমি,দিদারছে চলছে পুকুর খনন

নওগাঁ প্রতিনিধি :

 

নওগাঁয় ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খননের হিড়িক।

আশংখ্যাজনক হারে কমছে ফসলি জমি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাঠের আবাদি ( ফসলি) জমিতে পুকুর খনন করার পর তোলা মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ভূমি আইন উপেক্ষা করে অবাধে পুকুর খননের ধুম পড়েছে তারপর স্থানীয় প্রশাসন তেমন কঠোর (জোরালো) কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারনে, আশংখ্যাজনক হারে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পুকুর খননের কাজ। কমে যাচ্ছে ফসলি (আবাদি) জমির পরিমাণ।

 

 

 

অন্যদিকে ইটভাটার চাহিদা মেটাতে দেদারচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটিও। পাশাপাশি মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে নষ্ট হচ্ছে প্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো।

 

 

 

 

নওগাঁ সদর মান্দা,নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর, আত্রাই ও রানীনগর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। পুকুর খনন ছাড়াও জেলার কয়েকটি এলাকার ফসলি জমির মাটিও কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়।স্থানীয়রা জানান, জেলায় নির্দিষ্ট এক শ্রেণীর অসাধু চক্র ভাড়া বা কন্ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি খননের জন্য ভিকু মেশিন এনে এলাকায় ভূমি আইন উপেক্ষা করে একের পর এক ফসলি জমিতে পুকুর খনন করেই চলেছেন।

 

 

 

এমনকি বাগানের জমির মাটি কেটে সেখানে পুকুর খনন ও করছেন কেউ কেউ। নওগাঁ সদর চকপ্রসাদ,বোয়ালিয়া,ফতেপুর, বলিহার ইউনিয়নে কিসমত কসবা,পয়না হাসপাতালের রাস্তায় বিশাল পরিসরে চলছে পুকুর খননের কাজ। জমির মাটি বিক্রয়ের জন্য ট্রাক্টর (কাঁকড়া) দিয়ে সাড়াদিন বহন করে চলছে রাস্তায়, কাঁকড়ার চলাচলের কারণে ধুলোবালিতে রাস্তায় পরিপূর্ণ, স্কুলের বাচ্চাদের অবিভাবকরা অভিযোগ করে জানায়, প্রতিনিয়ত এতো ধুলোবালিতে কিভাবে বাচ্চারা স্কুলে যাতায়াত করবে? পাকা রাস্তার উপর মাটি বহন করায়, এতোটাই মাটি রাস্তায় পড়েছে যে দেখে চেনার উপায় নাই, এটি পাকা রাস্তা নাকি মাটিরই রাস্তা।

 

 

 

এই ধুলোবালি থেকে বাঁচতে পয়নাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। হাঁপানিয়া ইউনিয়নে সরকারী খাস জমি থেকে মাটি উত্তলোনের অভিযোগ দেন এলাকাবাসী।

 

 

নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আমলাপুকুর গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঐ গ্রামে পৃথক পৃথক ভিকু মেশিন দিয়ে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন জমির মালিকরা। ঘটনাটি প্রশাসন জানার পরও পুকুর খনন সম্পূর্ন করেন জমির মালিকরা যা দেখে স্থানীয়রা হতবাক। প্রশাসেনর নিষেধাক্কা থাকা সত্বেও পুকুর খনন করছে জমির মালিকরা।

 

 

 

এছাড়া কোনো কোনো এলাকায় (এস্কেভেটর) ভিকু মেশিন আবার কোনো এলাকায় শ্রমিক লাগিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মাটি। এসব মাটি খননে জমির শ্রেণী বদল বা প্রশাসনের কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। জমির মালিককে অর্থের লোভ দেখানো সহ বিভিন্নভাবে লোভে ফেলে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আবাদি জমির উপরি ভাগের টপসয়েল। আবার কোথাও দিনের বেলায় ভিকু মেশিন বন্ধ রাখলেও রাতের বেলায় চুটিয়ে চলছে পুকুর খনন কাজ।

 

 

 

এতে করে দিনদিন আশংখ্যাজনক ভাবে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ।

 

 

এভাবে চলতে থাকলে আগামিতে শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁ জেলা হারাতে বসেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক গোলাম ফারুক হোসেন জানান, শিল্প কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন কারণে দেশে প্রতিবছর এমনিতেই ১% হারে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে।

 

 

 

এছাড়া ফসলি জমির উপরিভাগের ৬ ইঞ্চি পরিমাণ মাটিতে জৈব পদার্থ থাকায় একে টপসয়েল বলা হয়ে থাকে।

 

 

জমির এই অংশ কোনোভাবেই কেটে নেওয়া উচিত নয়।তিনি আরও বলেন, কৃষি জমির টপসয়েল কেটে নেওয়া হলে ওই জমিতে আর কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন সম্ভব না।

 

 

এতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *