
নিজস্ব প্রতিবেদক:বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় চলে আসেন ফয়সাল গনি (৩০)। এখানে এসে টিউশনি শুরু করেন। কিন্তু যা পেতেন তাতে তার পকেট খরচ হতো না। এরপর শুরু করেন বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন টাকা।
এসব অভিযোগে সোমবার (১৭ মে) রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়া থেকে ফয়সাল গনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন মিয়া জানান, গ্রেফতার ফয়সালের বাড়ি ঝিনাইদহের হড়িনাকুণ্ড থানার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামে। তার বাবা ঢাকায় একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়া-লেখাকালীন মাদারীপুরে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। অনার্স শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে জীবিকার তাগিদে চলে আসেন ঢাকায়। এ সময়ে বাড়তি টাকার আশায় প্রেমিকার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন। চাকরির কথা বলে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন টাকা। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
প্রেমিকা যখন বিষয়টি বুঝতে পারেন, তখন বিয়ের জন্য চাপ দেন। এরপর ফয়সাল নিজেকে আড়াল করার জন্য প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সবশেষ মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তেজগাঁও থানায় মামলা হয়। তেজগাঁও থানা পুলিশ ফয়সালকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
এসআই আরও জানান, জামিনে এসে ফয়সাল আবার শুরু করেন প্রতারণা। এবার মিরপুরের শাহ আলীবাগে ব্যাচেলর একটি মেসে ওঠেন। এরপর টাঙ্গাইলের এক স্কুল পড়ুয়া কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন ফয়সাল। এরপর কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বয়স কম হওয়ায় মেয়ের বাবা এ বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি। তখন গোপনে ওই কিশোরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন ফয়সাল। এ সময় তাকে সরকারি চাকরি দেয়ার কথা প্রলোভন দেখিয়ে তার পরিবারের কাছ থেকে কৌশলে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা ও দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৪ মে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান জানান, ওই মামলা তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে তেজগাঁও থেকে ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি বলেন, তদন্তে করতে গিয়ে আরেকটি ঘটনা বেরিয়ে আসে। সেটা মিরপুরের। ফয়সাল সেখানে যে মেসে ছিলেন তার পাশের ফ্লাটে থাকেন এক মুদি ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীর মেয়ের সঙ্গে গড়ে উঠে তার প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীর পরিবারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। নেই পরিবারটিকেও ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামাল হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান ফয়সাল।
ব্যবসায়ীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯ মে আরেকটি মামলা হয় বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।