Subscribe our Channel

ঐতিহ্যের গ্রামীণ নকশী পিঠা ছাড়া জমে না ময়মনসিংহের ঈদের সকাল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদ উপলক্ষে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন রকমের নকশী পিঠায় মেতেছে ময়মনসিংহ। ঈদের দিন সকালে অতিথি আপ্যায়নে কিংবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে ঈদ উপহার হিসেবে হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন গ্রামে বাড়ির উঠানে, ঘরের আঙিনায় কিংবা বাসার ছাদে পিঠা ও সেমাই বানানোর দৃশ্য সবার নজর কাড়ে। পিঠা তৈরির জন্য জড়ো হন নারী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা। কেউ নকশী পিঠা, কেউ হাতে কাটা সেমাই, কেউ বাবুই ঝাঁক পিঠা বানান আবার কেউ এগুলো রোদে শুকান।এসব পিঠার মধ্যে অন্যতম হলো, নকশী পিঠা, জামাই পিঠা, ঝর্ণা পিঠা, বাবুই ঝাঁক পিঠা, পয়সা পিঠা, ঝুড়ি পিঠা, সাবুদানা পিঠা, পাতা পিঠা, ঝিনুক পিঠা ও হাতে কাটা সেমাই।পৌর শহরের গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বলেন, হাতে কাটা সেমাইসহ বিভিন্ন ধরনের নকশী পিঠা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এগুলো আমরা নিজেরা খাই এবং আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে পাঠাই। এগুলো বানানো ও শুকানোর মধ্যেও ঈদের আনন্দ কাজ করে।কলেজ ছাত্রী স্বর্ণা আক্তার বলেন, হাতে কাটা সেমাই, নকশী পিঠা, সিরিঞ্জ পিঠা, পয়সা পিঠা এগুলো আমাদের গ্রামীণ ইতিহাসের অংশ। এগুলো ছাড়া আমাদের ঈদ আনন্দ জমে না।গৃহবধূ তমা আক্তার বলেন, আমরা দলবেঁধে বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও সেমাই তৈরি করে থাকি। এসব পিঠা তৈরি করতে চালের গুঁড়া, বেলুন, পিড়ি, কাটার, খেঁজুর কাঁটা অথবা সুঁই, তেল, কলাপাতা, রঙ ইত্যাদি লাগে।

পরে কাঁচা পিঠা রোদে শুকানো হয়। এগুলো ঈদের দিন সকালে গরম তেলে ভেঁজে চিনি অথবা গুড়ের রস তৈরি করে ডুবিয়ে খাওয়ার জন্য পরিবেশন করা হয়।এদিকে হাসপাতাল রোডের গৃহবধূ সানজিদা জাহান ফরাজী হাতে কাটা সেমাই ও হাতে বানানো কলের সেমাই অনলাইনে বিক্রি করে হয়েছেন সফল নারী উদ্যোক্তা। হারানো দেশীয় ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার ছোট উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।সানজিদা জাহান ফরাজী বলেন, হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন ধরনের নকশী পিঠায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এতো বিক্রি হবে আমি কখনো ভাবিনি।গফরগাঁওয়ের আলতাফ গোলন্দাজ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও নারী উদ্যোক্তা শ্রেষ্ঠ জয়িতা জুলেখা খাতুন সোমা বলেন, উপজেলায় মেয়ে ও গৃহবধূরা পিঠা নিয়ে কাজ বেশি করছেন। আলহামদুলিল্লাহ এতে ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে, সমাজের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তাদের জীবনমানও উন্নত হচ্ছে। পিঠাগুলো নতুন আঙ্গিকে দেশীয় ঐতিহ্য সমাজে তুলে ধরছে। আমাদের গ্রাম বাংলার নারীরা দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও পিঠা রপ্তানি করবে ইনশাআল্লাহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *