জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : মুনতাসীর মামুন। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক গবেষক। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। ঢাকা শহরের অতীত ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন। রয়েছে অসংখ্য রচনা।বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি, ছাত্রলীগের সমাবেশ ও বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মুখোমুখি হন । সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু।সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরে স্কুলে শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনক হারে কমে আসার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। এ বিষয়ে জাগো নিউজকে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘দেশে ধর্মান্ধ শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ঘটছে। সেক্যুলারিজম এবং প্রগতিশীলতার পথ রুদ্ধ করছে নানান ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে।’তিনি বলেন, ‘ব্যানবেইস যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা নজরে এসেছে। এমন প্রতিবেদন আগেও প্রকাশ করা হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে সাধারণ (স্কুলে) শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে প্রায় দশ লাখ। পক্ষান্তরে মাদরাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়ছে। এটি কী ধরনের সংকেত বহন করছে, তা নিয়ে আমার চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে।
এ নিয়ে যথাযথ ব্যাখ্যাটা শিক্ষামন্ত্রীই দেবেন বলে জাতি প্রত্যাশা করে।’‘আমরা শুধু বলবো যে ধর্মান্ধ এবং ধর্মাশ্রয়ীর সংখ্যা বাড়ছে- ব্যানবেইসের প্রতিবেদন তার প্রমাণ। দেশে ধর্মীয় প্রভাব বাড়ছে সব জায়গায়। শিক্ষা, রাজনীতি সব জায়গায়ই আমরা এমন চিত্র গভীরভাবে লক্ষ্য করছি।’এ বিষয়ে সরকার বা রাষ্ট্রের দায় কতটা- জানতে চাইলে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী নই। আমি বোঝাতেও পারবো না। আপনারও আসলে প্রশ্ন ছাড়া কিছু করার নেই। কারণ আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা সরকারের। কিন্তু সরকার সংশ্লিষ্টরা আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেবে না বা দিতে পারবে না।’তিনি আরও বলেন, ‘সরকার কী ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চায় তা শিক্ষামন্ত্রী বলতে পারবেন। তিনি যদি সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা চান, তাহলে তার উত্তর দেওয়া দরকার কেন মাদরাসা শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে। আর যদি বলেন যে আমরা ধর্মীয় শিক্ষার আরও প্রসার চাই, তাহলে তো প্রশ্নের কোনো কারণ নেই।’ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণে মনে হয়েছে সেক্যুলারিজম এবং প্রগতিশীলতার পথ রুদ্ধ করছে নানান ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। অন্যদিকে প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থার পথ সুগম করে দিচ্ছে।’বুয়েটের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘বুয়েটের পরিস্থিতি অনেকেই মৌলবাদ, জামায়াত-শিবির বা হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে মিলিয়ে কথা বলছেন। আমি এভাবে মিলিয়ে দেখতে চাই না। তুমি ছাত্রলীগের সমর্থক হতে পারো, কিন্তু বাস্তবতা তো অস্বীকার করার উপায় নেই। ছাত্রলীগ দেখলে সবাই ভয় পায়! ওবায়দুল কাদের যতই বলুন, তুমি বাইরের মানুষের সঙ্গে একটু আলাপ করে দেখো তারা ছাত্রলীগ নিয়ে কী মন্তব্য করে?’তিনি আরও বলেন, ‘বুয়েটে ৫ হাজার শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে। তারা কি সবাই হিযবুত তাহরীর করে? প্রশ্নই আসে না। সবাই শিবিরও করে না। উপলব্ধি করা দরকার কেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাইছে।’