মারুফ সরকার, স্টাফ রিপোর্টার : হিন্দু ধর্মালম্বী সকল অনুসারীগণের কাছে মা সরস্বতী হলেন বিদ্যা বা শিক্ষা, সঙ্গীত, শিল্পকলার দেবী। বৈদিক এই দেবী বেদে সরস্বতী নদীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পালিত হয় সরস্বতী বন্দনা। যেহেতু এই পূজা বিদ্যালাভের জন্য করা হয়ে থাকে, তাই স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজা হলেও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ পূজো করতে দিচ্ছে না। প্রতি বছর বার বার আবেদন পত্র দিলেও মেলেনি কোনো সমাহার। গতবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ অগ্রাহ্য করে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পরে ক্যাম্পাসের বাহিরে রমনা কালী মন্দিরে প্রথমবার পূজো করে। আগের বছরের ন্যায় এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ডিভিশন অফ স্টুডেন্ট অ্যাকটিভিটিসের প্রধান এবং রেজিষ্টার স্যার কে পূজার বিষয়টা জানানোর পর বিভিন্ন ভাবে নানান অজুহাত দেখিয়ে এবারো পূজো করতে দিলেন না ক্যাম্পাসে। এর দাবীতে ছাত্র ছাত্রীরা একজোট হয়েও প্রায় অর্থ সহস্রাধিক সনাতনী শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর সহ লিখিত আবেদন জমা দিলেও সেটা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অফিস।
প্রতিবাদ স্বরূপ ছাত্র ছাত্রীরা অফিসের সামনে একজোট হয়ে দাঁড়ায়। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি কখনোই কোন ধর্মীয় প্রোগ্রাম হয় না, যদিও কথিত সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বিভিন্ন অফিস থেকে দুর্ব্যবহার করে লিখিত আবেদনপত্র অগ্রহ্য করে। এর আগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় পূজো দূর্গোপূজো যা বাংলাদেশে সার্বজনীন উৎসব হিসেবে পরিচিত, তখনো মাত্র ১ দিন(দশমী) তে ছুটি বরাদ্দ থাকতো, গত বছর কঠোর আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে পড়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ মাত্র ২ দিন (নবমী, দশমী) ছুটি বরাদ্দ করে যেনো চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে; যদিও বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের অসাম্প্রদায়িক হিসাবে দাবি করে। কয়েকজন শিক্ষার্থী আরো জানান, বিদ্যাদেবীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আরাধনা করতে তারা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন। গতবছরের ন্যায় এইবছরেও ক্যাম্পাসে অনুমতি না পাওয়া সত্ত্বেও ক্যাম্পাস থেকে কিছুটা দূরে ভাটারায় তারা পূজো করবেন। এবছরের পূজোর থিম, প্রতীকী শিক্ষার্থীদের চোখ বাঁধা এবং বাঁধা চোখে ইউনিভার্সিটির নাম লেখা যা অর্থবহ ইঙ্গিত বহন করে।