মারুফ সরকার,স্টাফ রির্পোটার: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চরশ্রীপুর গ্রামের ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাসকে সবাই চিনত একজন সাধারণ খেটে খাওয়া দিন মজুর হিসেবে। কয়েক বছর আগেও অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এখন ইদ্রজিতের সম্পদের পরিমাণ কোটি টাকার উপরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে তার বিপুল সম্পদের নেপথ্যে রয়েছে মাদক ব্যবসা, বিট কয়েন, অনলাইন জুয়া, অন্যের জমি দখল ও হুন্ডি কারবারি। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ইন্দ্রজিতের দখলদারির প্রতিকার চেয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন চর শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা নিশিকান্ত মণ্ডল। সাধারণ ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ইন্দ্রজিত নিশিকান্ত মণ্ডলের ২৭ শতাংশ পুকুর দখলের চেষ্টা করছে। তার চেষ্টায় বাধা দিলে ইন্দ্রজিতকে পুকুর ছেড়ে দিতে বলে এবং না ছাড়লে নিশিকান্ত ও তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার এসআই শরিফুল ইসলাম বিপি। তিনি বলেন, ওসি মহোদয়ের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে একজন সাধারণ দিন মজুর থেকে হঠাৎই কোটিপতি বনে যাওয়া ইন্দ্রজিত এখন তিনটি বিল্ডিং, বিপুল অর্থ এবং জমির মালিক। স্থানীয়রা জানান, কারো জমি পছন্দ হলেই ইন্দ্রজিত স্বল্প টাকায় অথবা বিনামূল্যে গায়ের জোরে দখল করে নেয়। বৈধ ব্যবসা ও দৃশ্যমান যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিপুল সম্পদের এই মালিক ইন্দ্রজিতের ভয়ে এখন অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। ভুক্তভোগী নিশিকান্ত মণ্ডল জানান, আমার কষ্টের টাকায় কেনা পুকুরটি ইন্দ্রজিত গায়ের জোরে দখল করতে চায়। সে আর তার কাকা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ও নিখিল বিশ্বাস ক্রমাগত আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি এ বিষয়ে থানায় জিডি করেছি। জিডি করার পরেও ইন্দ্রজিতের কাকা আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিচ্ছে। চর শ্রীপুরের বাসিন্দা বাবু বিশ্বাস বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোষণা দিয়ে পুকুরটি দখল করতে চেয়েছে ইন্দ্রজিত। পুকুরের সব মাছ তুলে নিয়ে পুকুরটির আসল মালিককে পুকুর ছেড়ে দিতে বলেছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করলেও সে জিডির বিষয়টি তোয়াক্কা করেনি। চর শ্রীপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা জনেক মণ্ডল বলেন, শুনেছি ভারতে দিলীপ বিশ্বাস নামে তার আলাদা আইডিকার্ড আছে। সেখানে তার বাড়ি-গাড়িও আছে। হুন্ডি, জুয়া আর মাদক ব্যবসা করে সে এখন অনেক টাকার মালিক। তার কাছে এখন গ্রামের সাধারণ লোকজন জিম্মি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত ইন্দ্রজিতকে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শোনামাত্র ফোন কেটে দিয়েছেন। শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মসিয়ার রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। ইন্দ্রজিত ছেলেটি কীভাবে এতো টাকার মালিক হলো তা আল্লাহই জানেন। শুনেছি সে কম্পিউটারে রাত জেগে কী জানি করে। প্রশাসনের সহায়তায় বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চলছে।