Subscribe our Channel

নিজেদের তৈরি করতে না পারলে আইন পেশায় টিকতে পারবেন না:প্রধান বিচারপতি

ফাইল ছবি

পীরগঞ্জ নিউজ এক্সপ্রেস ডেক্স :  আইন পেশায় নিজেদের তৈরি করতে না পারলে টিকতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন, গাড়ি, বাড়ি থাকবে কিন্তু আইনজীবী হিসেবে কেউ আপনাদেরকে মনে রাখবে না।সোমবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সমিতির আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।এ সময় প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি দেশের অনেক আইনজীবীর কথা স্মরণ করে জানান, বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও অতুল প্রসাদ সেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন। এছাড়াও ভারতের মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শের ই বাংলা একেএম ফজলুল হক আইনজীবী ছিলেন।নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধানে বর্ণিত যে কোনো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন। তাই দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পুনুরুদ্ধারের অন্যতম অনুঘটক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। কেননা যে ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তিনি সবার আগে আপনার কাছেই আসেন তার সমস্যার কথা খুলে বলতে। মনে রাখবেন, বার ও বেঞ্চ উভয়ের সমন্বয়েই বিচার বিভাগ।

তাই বিচার বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আপনাদের অংশগ্রহণ ব্যতীত দেশে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।বিচার বিভাগের অতীত ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়, আপোসহীন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার সংগ্রামের জন্য যুগে যুগে আইনজীবীরা সমাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। অতীতে আমাদের মহান সংবিধানের বিধানকে ভুলুণ্ঠিত করে দেশে যখনই স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে কিংবা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে- তখন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা রাজপথে নেমে এসেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নেতারা স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে কোনোরুপ আপোস না করে হাসিমুখে কারাবরণ করেছেন।মামলা জটের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রায় ৪০ লাখ মামলার ভারে বিচার বিভাগ আজ ন্যুজ। এছাড়াও, বিচারক স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব, বাজেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অধস্তন আদালতের কার্যকর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে মামলার দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসকল্পে এর আগের প্রধান বিচারপতি দেশের আটটি বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমন্বয়ে আটটি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছিলেন। মনিটরিং কমিটির সুফল পেতে শুরু করেছি। কিন্তু একজন বিচারপতির পক্ষে বড় একটি বিভাগের সবগুলো জেলার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান দূরহ একটি ব্যাপার। তাই মনিটরিং প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করার জন্য দেশের বৃহত্তর বিভাগসমূহের জন্য একাধিক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিকে দায়িত্ব দিয়েছি। বর্তমানে দেশের আটটি বিভাগের জন্য মোট ১৩ জন বিচারপতি সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত আছেন।সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজউদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বারের সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, সাবেক মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম এমপি, সাবেক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী ও সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী প্রমুখ।অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সদস্যভুক্ত নবীন আইনজীবীরাসহ উপস্থিত ছিলেন বারের অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *