ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ-পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিল সহদেব ও পার্বতীর৷ বিয়ের পর ভালো সংসার চলছিল তাদের৷ সংসার সুখে চললেও প্রশান্তি ছিলনা তাদের। কারন বিয়ের কয়েক বছর অতিক্রম হলেও সংসারে কোন সন্তান আসেনি তাদের। তবুও একজন অপরজনকে মানিয়ে নিয়ে চলছিল তাদের পথচলা৷ তবে প্রশান্তির বার্তা এলো পরিবারে। আট বছর পরে কোলজুড়ানো এক সন্তান পেল তারা। চেহারা সুন্দর হওয়ায় নাম রাখলো ঋত্বিক। ছোটবেলা থেকে চালাক চতুরতা লক্ষ করা যেত ঋত্বিকের৷ অন্ধকারে এক দীপ্ত আলোর ছোঁয়ায় আলোকিত সহদেব ও পার্বতীর পরিবারে। সাত মাস আগে একদিন উঠানে খেলা অবস্থায় কুকুর কামড় দেয় ঋত্বিককে। পরে ভ্যাকসিন নিয়ে চিকিৎসা নেওয়া হয়৷ তারপরে কিছুটা সুস্থ হলেও সেটা আর স্বাভাবিক ভাবে থাকা হয়ে ওঠেনি৷ দুই সপ্তাহ পরে জ্বরসহ অসুস্থ হয়ে পরে সে৷ খেতে পারতো না কিছু। খেলেই বুকে লেগে যেত তার।
আর ঘুম থেকে উঠলেই বাকা হয়ে যেত আর কান্না করতো৷ একমাত্র সন্তানকে চিকিৎসার জন্য অনেক জায়গায় নিয়ে গেছে ঋত্বিকের পরিবার৷ সন্তানকে সুস্থ করার জন্য দিনাজপুর থেকে রংপুর, আর রংপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলেও সুস্থ হয়ে ওঠেনি সে৷ চিকিৎসকরা বলতে পারছেননা কি রোগে আক্রান্ত ঋত্বিক। ঘুম,কান্না, শারীরিক বিকৃতির আচরণ, কথা না বলা,শরীর শুকিয়ে নিস্তেজ হয়ে যাওয়া নিয়ে পথচলে তাদের। সন্তানকে সুস্থ করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় নেওয়াতে এখন নিঃস্ব দিনমজুর সহদেব। তবুও স্বপ্ন দেখে একমাত্র সন্তান আবার সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠবে৷ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের নওয়াপারা গ্রামের বাসিন্দা সহদেব৷ নিজের দশ শতক বসতভিটা জমি ছাড়া কিছুই নেই তার৷ দিনমজুর হিসেবে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে তার৷ সন্তানকে সুস্থ করতে গিয়ে যা পুঁজি ছিল তা শেষ হয়ে গেছে৷ মাঝখানে বাড়ি থেকে সাইকেলসহ ছেলের চিকিৎসার জন্য রাখা তের হাজার টাকা চুরি হয়ে যায় তার। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা না করাতে পেরে সন্তানকে নিয়ে করুণ সময় অতিক্রম করছে সে৷ প্রতিনিয়ত সন্তানের আর্তনাদ ব্যকুল করে তোলে সহদেব ও তার স্ত্রীকে৷ তবুও চোখে মুখে স্বপ্ন দেখছেন ঋত্বিক আবার আগের মত সুস্থ হবে৷কেউ তাদের পাশে দাঁড়াবেন। স্থানীয় প্রতিবেশী রঘুনাথ বলেন, সহদেব অনেক সাদামাটা মানুষ৷ স্ত্রী আর ছেলে ঋত্বিককে নিয়ে ভালই চলছিল তার সংসার। কুকুর কামড় দেওয়ার পর চিকিৎসা করে। পরে আবার নানা রোগ দেখা যায়। ছেলেকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন সে নিঃস্ব। উন্নত চিকিৎসা এখন জরুরি। আমরা এর আগে সহায়তা করে চিকিৎসা করিয়েছি।
এখন অনেক টাকা দরকার। সরকারি সহায়তা ও বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে হয়তো ঋত্বিক আবার আগের মত সুস্থ হয়ে উঠবে। স্থানীয় প্রতিবেশী লিলি বেগম বলেন, বাচ্চাটাকে সুস্থ করার জন্য অনেক জায়গায় নিয়ে গেছে৷ কেউ বলতে পারছেনা কি রোগ হয়ছে৷ এখন ছেলেটার ভাল চিকিৎসা দরকার। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেনা৷ এরাও অনেক গরীব। দিনে আনে দিনে খায়৷ সবাই এগিয়ে আসলে হয়তো বাচ্চাটা আবার আগের মত সুস্থ হয়ে ওঠবে। ঋত্বিকের মা পার্বতী রাণী বলেন,আমার বাবা-মায়ের পরিবার অনেক গরীব৷ আর বিয়েও হয়েছিল গরীব ঘরে। বিয়ের আট বছর পরে আমার একটি সন্তান হয়৷ হাজার অভাবেও ছেলেটাকে নিয়ে অনেক আনন্দে ছিলাম। অনেক সুন্দর করে সংসারটা চলছিল আমার৷ সাত মাস আগে আমার ছেলেটা উঠানে খেলতেছিল। খেলা অবস্থায় কুকুরে কামড় দেয়। তারপর ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়৷ তারপর দু”তিন মাস আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠে৷ হুট করে একদিন অসুস্থ হয়ে পরে। তারপর বাচ্চাটাকে নিয়ে দিনাজপুর, সেখান থেকে রংপুর সর্বশেষ ঢাকায় নিয়ে যায়। কেউ বলতে পারছেননা এটা কি রোগ৷ আমরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছি৷ কোন ধরনের উপকার পায়নি৷ এভাবেই দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাদের সম্বল বলতে এই অজানা রোগে আক্রান্ত সন্তানটি ছারা আর কিছু নেই৷ আমাকে সারাদিন বাচ্চাটাকে নিয়ে থাকতে হয়। সারাদিন ঘুমায়, ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি করে আর বাকা হয়ে যায়। খাওয়ার সময় বুকে লেগে যায় আর চিৎকার করে৷ এখন তাকে চিকিৎসার জন্য যে কোন জায়গায় নিয়ে যাব তার সামর্থ্য নেয়৷ আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। কাজে গেলে খেতে পারি না হলে না খেয়ে থাকতে হয়। এখন যদি আপনারা এগিয়ে আসেন তাহলে ছেলেটাকে সুস্থ করা সম্ভব নাহলে সম্ভব না। আপনারা এগিয়ে আসুন আমার শেষ ধনকে সুস্থ করাতে। ঋত্বিকের বাবা সহদেব রায় বলেন,আমি মিলের চাটালে ভুট্টা শুকানোর কাজ করি। দিনে যে টাকা আয় হয় তা দিনেই শেষ হয়ে যায়। এর আগে ছেলেটাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। ডাক্তাররা বলতে পারছেনা কি রোগ হয়ছে৷ টাকার অভাবে ভাল চিকিৎসা করাতে পারছিনা। যদি আপনারা সবাই এগিয়ে আসেন তাহলে আমার শেষ সম্বল এই ছেলেটাকে হয়তো বাচাতে পারব৷ স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলী বলেন,বাচ্চাটাকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসা করানোর জন্য। আমি নিজেই সাথে নিয়ে ঢাকায় গেছিলাম।
কি রোগ হয়েছে কোন ডাক্তার বলতে পারছেননা৷ যা সম্বল ছিল আর আমরা যা সহযোগিতা করেছি সব শেষ৷ এখন এমন একটা ছেলের অবস্থা যা বলার মত না। সে নিজেও বে-উপায়৷ টাকার অভাবে ছেলেটাকে চিকিৎসা করাতে পারছেনা। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সহযোগীতা করার জন্যঃ- ঋত্বিকের বাবা সহদেব:- 01774155598 (বিকাশ) বিস্তারিত জানার জন্যঃ- বিবেকান্দ রায়, স্থানীয় শিক্ষক 01717976204