নিজস্ব প্রতিবেদক(বগুড়া) : সারাদেশের মতো বগুড়ায়ও ঊর্ধ্বমুখী ডিমের বাজার। গেলো সপ্তাহে ডিমের হালি ছিল ৩৬-৩৮ টাকা। কিন্তু চলতি সপ্তাহে সেই ডিম হালিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকায়। কোথাও কোথাও খুচরা ৫০ টাকা হালিতেও ডিম বিক্রির খবর পাওয়া গেছে।বগুড়া ফতেহ আলী বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মাহবুব বলেন, আগের সপ্তাহে ডিমের দাম ছিল ৩৬-৩৮ টাকা হালি। এখন বাজার চড়া, ৪৫ টাকা হালিতে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। এ কারণে অনেক ক্রেতা কমে গেছে। মুরগির খাদ্য ও ওষুধের দাম বাড়ার কারণে ডিমের দাম বেড়ে গেছে।এদিকে, দাম বাড়ার কারণ হিসেবে পোলট্রির খাবার ও ওষুধ উৎপাদনে জড়িতদের দোষারোপ করছেন ডিম ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, মুরগির খাবার ও ওষুধের দাম বাড়ানোর কারণে ডিমের দাম বেড়েছে।
বর্তমানে পাইকারিভাবে একশো ডিম ১ হাজার ৮০ টাকায় কিনে বাজারে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।রাজাবাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা রতন সরকার বলেন, পোলট্রি ফিডের মিল মালিকরা খাদ্য ও ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম হালিতে সাত থেকে ১০ টাকা বাড়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। বেচাকেনা কমে যাওয়ায় লাভের পরিমাণও কমে গেছে।পাইকারি দামে ডিম কিনতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, দাম বাড়ায় তিনি আগের মতো ডিম বিক্রি করতে পারছেন না।
বগুড়া জেলা পোলট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এর আগে বগুড়ায় পোলট্রি খামার ছিল প্রায় ৫ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে ডিম উৎপাদনের খামার ছিল ২০০টি। বর্তমানে যা ঠেকেছে প্রায় ৫০টিতে। গত বছর পোলট্রি ফিডের ৫০ কেজির প্রতি বস্তার দাম ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। এর বর্তমান মূল্য ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। সেদিক থেকে দেখলে খাদ্যের মূল্য প্রতি বস্তায় বেড়েছে এক হাজার টাকা। এছাড়া ওষুধ ও ভ্যাকসিনের দামও বেড়েছে।
যার প্রভাব পড়ে মুরগি ও ডিমের বাজারে।কিছু ব্যবসায়ীর অভিযোগ, দাম বাড়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনো হাত নেই। দেশের পোলট্রি ফিডের মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের বেশিরভাগ ডিম উৎপাদনকারী খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, এ কারণে অনেক ব্যবসায়ীকেই খামার বন্ধ করে দিতে হয়েছে।বগুড়া জেলা পোল্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল আমিন বলেন, দেশের কিছু পোলট্রি খাদ্য উৎপাদনকারী মিল মালিক ছয়-সাত বছর আগে ডিম উৎপাদনের ব্যবসায় আসেন। প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা যেন এ ব্যবসায় টিকে থাকতে না পারে এজন্য বিগত বছরগুলোতে কম মূল্যে ডিম বিক্রি করে তারা পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
সরকার যদি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এ ব্যবসায় প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকতে পারবে না।