মোঃ তোতা মিয়া পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১নং অমরখানা ইউনিয়নের পূর্ব অমরখানা গাছবাড়ী গ্রামের দিনমুজুর মোঃ জহিরুল ইসলাম( ৩৫) এর সাথে মুক্তা বেগম (৩০) এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালই চলছিলো তাদের দুজনের সংসার জীবন, এবং দুটি সন্তানের জন্ম হয়।মোঃ জহিরুল ইসলামের কোনো জায়গা জমি নেই, সরকারি খাস জমিতে ঘড় তুলে কোন রকম দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাতো।
এরিমধ্যে একই এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের বিদেশ ফেরত লম্পট পুত্র মোঃ ফারুক হোসেন (২৪) এর কুনজর পরে মুক্ত বেগমের উপর ।এদিকে ফারুক মুক্তা বেগমের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিয়ে করার কথা বলে মুক্তা বেগমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এরি মধ্যে গত ২৪/৬ /২০২০ ইং তারিখ রাতে মুক্তা বেগমের স্বামীর অনুপস্থিতিতে মুক্তা বেগমকে সুকৌশলে জোরপূর্বক মুক্তার বাড়ির রান্না ঘরে ধর্ষণ করতে থাকলে তার শশুর টের পায়, পরে মুক্তা ও ধর্ষক ফারুক কে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে তার শশুর চিল্লাহাল্লা করলে ফারুক পরনের কাপড় গেঞ্জি, প্যান্ট, জুতা, রেখে পালিয়ে যায়। মুহুর্তের মধ্যে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় বিভিন্ন নেতা, মাতাব্বর, ও ইউপি সদস্যদের প্যাকেজ বাণিজ্য। নানা জনের নানা কথা দিশেহারা হয়ে পড়ে মুক্তা বেগমের স্বামীর বাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে মুক্তা বেগম কোন কুলকিনারা না পেয়ে ছেলে সন্তান দুটিকে রেখে বিয়ের দাবিতে লম্পট ফারুকের বাসায় অন্বেষণ করতে থাকে।এদিকে মুক্ত বেগম কে ফারুক তার বাসায় অন্বেষণ করতে দেখে ফারুক বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন। এরি মধ্যে মুক্তা বেগম এর কাছে খবর আসে ফারুক নাকি মুক্তাকে বিয়ে করবে। পরে রাতের বেলায় মুক্তাকে কাজী অফিসের কথা বলে মুক্তাকে নিয়ে যায় ১নং অমরখানা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ কাবিলা মেম্বারের বাসায়। পরে ফারুকের সাথে কাজী রেজিস্ট্রির কথা বলে সুকৌশলে মুক্তাকে আপোষ নামায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন ও কয়েকটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন নেতা, মাতাব্বর, ও ইউপি সদস্যরা। স্বাক্ষর করার পর মুক্তা বেগমকে বলে আজ থেকে তুমি আর ফারুক স্বামী-স্ত্রী। পরে মুক্তা বেগম কে এনে মুক্তার পূর্বের স্বামী জহিরুল ইসলামের বাসায় ঢুকিয়ে দেন ওই ব্যক্তিরা।
এভাবে একের পর এক প্রতারিত হওয়ার পর কোথাও বিচার না পেয়ে মুক্তা বেগম আইনের প্রতি শরণাপন্ন হয়ে ৬ জন কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন আসামিরা হলেন, মোঃ ফারুক হোসেন (২৬), মোঃ মকবুল হোসেন (৪০), উভয়ের গ্রামঃ পূর্ব অমরখানা, গাছবাড়ি, মোঃ জসিম উদ্দিন (পন্ডিত) (৫০), গ্রামঃ ছোট কামাত, মোঃ আফজল হোসেন (৪৫), মোঃ ফয়জুল হক (৫৫) উভয়ের গ্রাম পূর্ব অমরখানা গাছবাড়ি, মোঃ লিয়াকত আলী (৫৭), এছারাও আরো অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন ব্যক্তি কে আসামী করে পঞ্চগড় থানায় মামলা। ৬ জনের মধ্যে ৫ জন আসামী যামিনীনে বেরিয়ে এসে মুক্তা ও তার স্বামী-শ্বশুরকে হুমকি দেন মামলা তুলে নিতে। রাতের আঁধারে তাদের বাড়িতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালান ঘর দুয়ার রামদা দিয়ে চটায়, ঘরের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে । এখন মুক্তার স্বামী রাতে বাড়িতে থাকেন না আতঙ্কে জীবন যাপন করছেন বলে অভিযোগ জানান পরিবারটি। মুক্তা বেগমের শশুর ধারণা করছেন তার ছেলে জহিরুল ইসলাম কে খুনও করতে পারে ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের লোকজনেরা।
এবিষয় পঞ্চগড় সদর থানার এস. আই. মোঃ ফিরোজ জানান, গত ২৪-০৭-২০২০ইং তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং ২৩ । এই মামলায় ৬ জনকে আসামি করা হয় এবং তাদের ৬ জনকেই আটক করা হয় । পরে আদালতের মাধ্যমে ৫ জন আসামী যামিনীনে বেরিয়ে আসেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রধান আসামির আলামত প্যান্ট, গেঞ্জি, জুতা, থানায় হেফাজতে রয়েছে।