Subscribe our Channel

লক্ষীপুরে ২৩ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন 

 সোহেল হোসেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তড়িঘড়ি করে দাফনের ২৩ দিন পর বৃদ্ধ বাদশা মিয়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেনের উপস্থিতিতে কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। লক্ষ্মীপুর রায়পুরের চরমোহনা ইউনিয়নের উত্তর রায়পুর গ্রাম থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, বাদশা মিয়ার দুই ছেলে গোপনে জমি লিখে নিয়েছিল।
ওই দলিল বাতিল চাওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে ছেলেরাসহ হত্যা করেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেন বলেন, মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নতদন্তে শেষে লাশ ফের দাফন করা হবে। এদিকে বাদশা মিয়া হত্যার ঘটনায় দুই ছেলে মো. হাছানুজ্জামান ও মো. নুরুজ্জামান জেলা কারাগারে রয়েছেন। গত ১৯ জুলাই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে দেন। এরআগে ১৬ জুলাই উত্তর রায়পুর গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুলাই সিনিয়র জুডিনিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ( রায়পুর ) আদালতে বৃদ্ধ বাদশা মিয়াকে হত্যার অভিযোগে অপর ছেলে মো:  আলম গ্রেপ্তার দুইভাইসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করেন। এ ঘটনায় আদালতের বিচারক তারেক আজিজ অভিযোগটি আমলে নিয়ে রায়পুর থানার ওসিকে এফআইআর নথিভুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়। পরদিনই থানায় মামলাটি নথিভূক্ত করে এজাহারভূক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃত্যুর পরদিন লাশ দাফন করা হয়। মামলার তদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্য আসামিরা হলেন হাছানুজ্জামানের স্ত্রী আয়েশা বেগম, নুরুজ্জামানের স্ত্রী এলাপি খাতুন ও উত্তর রায়পুর গ্রামের মৃত ইউছুফ আলী মোল্লার ছেলে শাহ আলম। এজাহারে বলা হয়েছে, বাদশা মিয়াকে প্রতারণা করে হাছানুজ্জামান ও নুরুজ্জামান তাদের নামে ১০৭ শতাংশ জমি লিখে নেয়।
পরে হাছানুজ্জামান তার ঘরের একটি কক্ষে বাদশাকে আটকে রাখে। অপর ছেলে আলম ও ৩ মেয়ের সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দিচ্ছিলেন না। পরবর্তীতে জমি লিখে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আলম ও তিন মেয়ে বিষয়টি তাকে (বাদশা) জানায়। এতে বাদশা জমির দলিলটি বাতিল করার জন্য আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এতেই গত ৬ জুলাই রাতে তাকে অভিযুক্তরা লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। হাছানুজ্জামানের ঘরেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে ছেলে আলম ও তিন মেয়ে ঘরে ঢুকে দেখেন বাদশার মাথায় ও ডান হাত রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছে। সন্দেহজনক হওয়ায় লাশ দাফনে তারা বাধা দেয়। পরে নির্ধারিত সময়ের আগেই তড়িঘড়ি করে জোরপূর্বক লাশ দাফন করে আসামিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *