
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলায় একদিনের ব্যবধানে জামিন জুয়ারি আসামী, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাদীসহ পরিবার, রিমান্ড দরখাস্তে হয়নি কাজ। ঘটনাটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামের ধনিবুল্লাহথর ছেলে রোস্তম আলীর।
গত ১৮ এপ্রিল ২০২১ তেঁতুলিয়া মডেল থানায় রোস্তম আলী বাদী হয়ে উপজেলার ওই ইউনিয়নের কৃষ্ণকান্তজোত গ্রমের জমিরুল হকের ছেলে হাসিনুর রহমান, মহল্লালজোত গ্রামের মৃত জাহিদুলের ছেলে সফিকুল আলী, মৃত তফিল হোসেনের ছেলে জাকের আলী ও দুলাল আলী, ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম, হাকিমপুর গোয়াবাড়ি গ্রামের পিতা অজ্ঞাত কামাল হোসেন, নতুনবস্তি গুচ্ছগ্রামের বাবুলের ছেলে সোহাগ, পিতা অজ্ঞাত বাদশাসহ আরোও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামী করে একটি মামলা আনয়ন করেন। অতঃপর গত ২৬ এপ্রিল হাসিনুরসহ ৩ জনকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি গণ অভিযোগ দায়ের করেন।
রোববার (২৩ মে ২০২১) আসামীরা সেলেন্ডার জামিন নেয়ার জন্য বিজ্ঞ আমলী আদালত-৪ তেঁতুলিয়া পঞ্চগড়ে কোর্টে গেলে ২জন কে জেল হাজতে ৫জন কে জামিনে মুক্তি দেয় আদালত এবং ১জন আসামী অনুপস্থিত ছিলেন।
এজাহার সূত্রে জানাযায়, বাদী রোস্তম আলীসহ একজন সাংবাদিক এবং একজন মানবাধিকার কর্মী ও কৃষিবিদ গত ১২ এপ্রিল বিকেলে তার ভোগদখলীয় জমিতে বোরো ধানের আবাদ দেখতে গেলে আবাদের নিকটে একটি বাঁশ ঝাড়ে বসে থাকা কিছু ব্যক্তি তাদেরকে হাতের ইশারায় ডাকলে তারা তাদের কাছে এগিয়ে যায়।
তারপর বাদী রোস্তম আলীর সঙ্গে থাকা সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও কৃষিবিদ-এর কার্ড দেখতে পেয়ে উপস্থিত ব্যক্তিগণ তাৎক্ষণিকভাবে বলে যে, শালা রোস্তম তুই তো জানিস আমরা এখানে জুয়া খেলতে এসেছি। আমাদের ধরা খাওয়ানোর জন্য সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও কৃষিবিদকে নিয়ে এসেছিস বলে আসামী হাসিনুর রহমান তার পকেট থেকে এক হাজার টাকার নোট বাহির করে দেয় এবং বলেন তুই এখান থেকে চলে যা।
এতে রোস্তম আলী টাকা নিতে অস্বীকার করলে বর্ণিত আসামীগণ তাদেরকে এলোপাথারী চর, থাপ্পর, কিল, ঘুসি ও লাথি মারেন। অতঃপর আসামীগণ বাঁশের কঞ্চি, মোটা বাঁশের লাঠি দ্বারা এলোপাথারি মারডাং করে রক্তাক্ত ফাটা জখম করেন এবং আসামী হাসিনুর রোস্তম আলীকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে বাঁশের কঞ্চি পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে রিভলভার(পিস্তল) দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে একটি ক্যামেরা ও ১২ হাজার ৮৬০ টাকা চুরি করেন। পরে রোস্তম আলী তেঁতুলিয়া মডেল থানায় অবগত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করেন। পুলিশের সহযোগিতায় তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভার্তি হন বলে জানাগেছে। মামলার বাদী রোস্তম আলী জানান, তিনি তার ভোগদখলকৃত বোরো ধানের খেত ও পতিত জমি দেখতে গেলে আসামীরা তাদের কাছে যাইতে বলেন, তিনি তাদের কাছে এগিয়ে গেলে তাদের জুয়া খেলার কথা ফাস হয়ে যাবেন টাকা দিতে চাইলে তিনি টাকা নিতে অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, টাকা নিতে অস্বীকার করায় আসামীরা আমাকে ও আমার সঙ্গে থাকা সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও কৃষিবিদকে মারপিটসহ রক্তাক্ত ফাটা জখম করেন এবং টাকাসহ ক্যামেরা চুরি করে নেন। তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞ আদালত গত ২৩ মে ১নং ও ৩ নং আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ২৪ মে হাজতি আসামীদের রিমান্ড নেয়ার জন্য তেঁতুলিয়া মডেল থানা কর্তৃক দরখাস্ত দেয়া হয়। কিন্তু ২৫ মে আসামীরা জামিন হতে পেরে প্রাণনাশের হুমকিসহ তার পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি করার পাঁয়তারার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় আছেন জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবু ছায়েম মিয়া বলেন, তিনি ২৪ মে আসামীর রিমান্ড চেয়ে দরখাস্ত পাঠিয়েছেন। রিমান্ড দরখাস্তটি প্রথমত সার্কেল অফিসে যাওয়ার কথা তিনি জানিয়েছেন।
মামলার জেনারেল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (জিআরও) মজিবর রহমান বলেন, ২৫ মে রিমান্ড দরখাস্ত পাওয়ার আগে দায়রা জজ আদালত পঞ্চগড়ে ১৪৯/২১নং মিস কেসের আবেদনের ভিত্তিতে আসামীদের জামিন দিয়েছে।
তিনি দরখাস্তটি ১২টার দিকে পেয়েছেন জানান। মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান বলেন, এজাহারে ধারার ত্রুটির করণবশত এই জামিনটি হয়েছে। তিনি মিস কেসের শুনানীর সময় রিমান্ডের কোন দরখাস্ত হাতে পায়নি।