
মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে অযতেœ অবহেলায় চার উপজেলার জেলখানায় ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। সেটি এখন বখাটে নেশাখোরদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। তবু নজর নেই কর্তৃপক্ষের। ১৯৮১ সালে সরকার গঠন করেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণকল্পে সরকারিভাবে থানাগুলোকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। সেই সঙ্গে বিচারকার্য সুবিধার্থে উপজেলাগুলোতে আদালত চালু করা হয়।
১৯৮৪ সালে দিনাজপুরের উত্তরে চার উপজেলা কাহারোল, খানসামা, বোচাগঞ্জ ও বীরগঞ্জ নিয়ে বীরগঞ্জ সার্কেল গঠিত হয়। এর আওতায় ২.২০ একর জমিতে বীরগঞ্জ উপ-কারাগারকে ১০০ জন কয়েদি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মিনি সাব জেলখানা করা হয়। সে সময় সারা দেশে ২৫টি উপ-কারাগারও করা হয়। যা বর্তমানে বীরগঞ্জ পৌরশহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। চিরিরবন্দরের বুসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘২০০৪ সালে বীরগঞ্জ উপকারাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকে এখানে আমি বাস ও দেখাশোনা করছি।
শুধু অবকাঠামো ছাড়া সরকারি জিনিসপত্র কারাগার কর্তৃপক্ষ নিয়ে যায়। উপ-কারাগারটি ২.২০ একর জমি নিয়ে গঠিত হয়। তবে বর্তমানে আছে ১.৭৫ একর। আব্দুর রহমান আরো বলেন, প্রায় ৪৫ শতক জমিতে আশপাশের মানুষের চলাচলে জন্য রাস্তা, মসজিদ ও এতিমখানা নুরানী মাদ্রাসা রয়েছে। অবকাঠামো পরিত্যক্ত থাকায় ঘরগুলোর ছাদ থেকে পানি পড়ে দেয়াল নষ্ট হচ্ছে। দরজা-জানালা নষ্ট হয়েছে। ছাদের ঢালাই খসে পড়ছে। আমরা বসবাস করলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি সর্বক্ষণ। আগে প্রায়শই চোরেরা ক্ষয়ক্ষতি করত। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। তবে রাতে নেশাখোররা অত্যাচার ও আক্রমণ করেন।
বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসিন আলী জানায়, এরশাদ সরকারের আমলে তৈরী হওয়া মিনি সাব জেলখানা বা বীরগঞ্জ উপ-কারাগারটি ১৯৯১ সালে এরশাদ সরকারের পদত্যাগের পরে বিএনপি সরকার গঠন করলে উপজেলা আদালত গুলোকে পুনরায় জেলা শহরে স্থানান্তর করা হয়। তখন হতে বীরগঞ্জ উপ-কারাগারটি অবহেলা, অযতœ, তদারকি ও দীর্ঘ ৩০ বছর সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভুতুড়ে পরিবেশে জেলখানাটি ভুতের বাড়িতে পরিনত হয়েছে। সরকারের উচিত এটি ফেলে না রেখে ব্যবহারের অনুপযোগী ডেমেজ পুরাতন বিল্ডিং গুলী ভেঙ্গে প্লান করে ঘর ও বিন্ডিং নির্মাণ করে এখানে পথকলী শান্তি নিবাস, বৃদ্ধাশ্রম অথবা যে কোন ট্রেনিং সেন্টার তৈরী করতে পারে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সারোয়ার মুর্শিদ জানায়, উপ-কারাগারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রায় ১৩ বছর পরে ২০০৪ সালের ২২ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হয়। রংপুর বিভাগে কোনো শিশু অপরাধী সংশোধনী ও পুনর্বাসন কেন্দ্র না থাকায় কারাগারটিকে তাতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছে সরকার। এ জন্য ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে একটি পরিদর্শন দল এটি পর্যবেক্ষণ করে ঘুরে গেছে।