
কলাপাড়া প্রতিনিধি:
কলাপাড়ার ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোন মুহুর্তে ভবন ধসের আশঙ্কা করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। ১৯৬৮ সালে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ফরিদগঞ্জ গ্রামে ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সেই থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী ২০২১ সালে এসেও বিদ্যালয়টি দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। যোগাযোগ ব্যবস্থার দূরাবস্থা সহ অবকাঠামোগতভাবে শুধুমাত্র ভবন ছাড়া টেকসই কোন উন্নয়ন হয়নি বিদ্যালয়টির। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩ জন শিক্ষক / শিক্ষিক্ষা এবং ৩ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। ষষ্ঠ শ্রেণী হইতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিজ্ঞান ও মানবিক শাখায় ছাত্র/ ছাত্রী ভর্তি আছে ৪০০ শত জন।
বিদ্যালয়টিতে একতলা বিশিষ্ট ৩ কক্ষের দুটি ভবনে শ্রেনী কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে( ১৫ ই আগষ্ট রবিবার) শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের একটির অবস্থা অত্যন্ত ঝু্ঁকিপূর্ণ। ছাদের ভিমসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেড়িয়েছে অনেক জায়গায়। এলাকার প্রবীন ব্যক্তি আইউব আলী বলেন, ” স্কুল খুললে পোলাপান (ছেলে মেয়ে) কেমনে স্কুলে পাডামু (পাঠাব) বিল্ডিং খইয়া(ধসে) পোলাপানের মাতায় পড়ে। কোন সোমায় জানি স্কুল ভাইঙ্গাচুইড়া সব পইড়া যায়। পোলাপানের লেহাপড়ার চাইতে জানডার দাম বেশি। লাগে অন্যস্কুলে দিমু”। প্রতিবেদকে পেয়ে এমন আক্ষেপের কথা বলছিলেন, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ফরিদগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী হাং।
স্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছে ইতিপূর্বে পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থীদের মাথায় পরে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। পুরো বিল্ডিংটি এখন ছাত্র/ ছাত্রীদের মরন ফাদে পরিনত হয়েছে। তারা বলেন গত ২ বছর যাবৎ করোনার কারনে পাঠদান বন্দ থাকলেও স্কুল শুরু হলে বিল্ডিংটি যুকিপুর্ণ হওয়ায় পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়বে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকে কখন জানি কি হয়। অভিভাবকরাও অনেক সময় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধা দ্বন্ধে ভোগে। তাদের বুঝিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে আনতে হয়। তারা আরও বলেন বর্তমানে বিল্ডিংটি মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ তাই অনেক অভিবাবক তার বাচ্চা অন্যস্কুলে ভর্তি করাতে চান। স্কুলে কর্মরত অফিস সহকারী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন ২০০০ সালে বিল্ডিংটি তৈরী হয়েছে। এত অল্পসময়ে এটা ঝুকিপূর্ণ হওয়ার কারন অত্যান্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করার ফলে এমন অবস্থা তৈরী হয়েছে।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন বিল্ডিং টা বর্তমানে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র শিমলাই বলেন, বর্তমানে স্কুল বন্ধ অনলাইন ক্লাস চলছে। কিন্তু স্কুল শুরু হলে এই ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিংয়ে ক্লাস করা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ মনে করি। ছাত্র / ছাত্রী ক্লাসে বসতে অনিহা প্রকাশ করে কারন ইতিপূর্বে পলেস্তারা খসে পড়ে বাচ্চারা আহত হয়েছে। এমতাবস্থায় আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এবং পটুয়াখালী ৪ আসনের মাননীয় এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তিনি যেন বিষয়টি অনুধাবন করে ছাত্র / ছাত্রী দের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্কুলের ভবনটি পুনঃর্নির্মাণ করে শিক্ষা ব্যবস্থা অব্যাহত রাখে তার জোর দাবি জানাই।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোখলেছুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি এর আগেও আমি জেনেছি তারপর আবারও আপনার মাধ্যমে জানলাম স্কুল ভবনটি ঝুঁকিপুর্ন সেখানে ক্লাস করা রিস্ক-এর তাই ভবনটি সংস্কার অথবা পূনঃনির্মান প্রয়োজন,তবে এই কাজটি সম্পন্ন করতে হলে মাননীয় এমপি মহোদয়ের সহযোগীতা এবং ডিউলেটার ছাড়া সম্ভব নয়। তবে এক্ষেত্রে তিনি আমাদের নির্দেশ প্রদান করলে ভবনটি পরিদর্শন করে সংস্কার অথবা পুনঃনির্মাণ যেটা দরকার সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব। পরবর্তীতে এমপি মহোদয় এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।