Subscribe our Channel

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

 নিজস্ব প্রতিবেদক : টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। শিডিউল বিপর্যয়ে পড়া ট্রেনগুলো দুপুর পৌনে ১টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে একে একে ছেড়ে যেতে শুরু করেছে।বিমানবন্দর রেল স্টেশন সূত্র জানিয়েছে, দুপুর পৌনে ১টায় স্টেশন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রেললাইন ছেড়ে বিমানবন্দরের তিন নম্বর কাউন্টারে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এরপরই ধীরে ধীরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।বুধবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাধারণ যাত্রীরাও ট্রেন থেকে নেমে বিক্ষোভে সামিল হন। এতে কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া আর কোনো অঞ্চলের ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। ফলে সকাল থেকে ২৫টিরও বেশি ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে।কমলাপুর রেল স্টেশন সূত্র জানায়, বুধবার সকাল আটটায় রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি ট্রেনের টিকিট কিনতে বিমানবন্দর স্টেশনের কাউন্টারে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এসময় তাদের মাত্র চারটি টিকিট দেওয়া হয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বুকিং সহকারীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের গতিরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া দেশের অন্য কোনো অঞ্চলের উদ্দেশ্যে ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি।বিমানবন্দর রেল স্টেশন সূত্র জানায়, বেলা পৌনে ১টায় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রেল লাইন ছেড়ে বিমানবন্দরের তিন নম্বর কাউন্টারে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তাদের আগামী ২৫ জুলাইয়ে সিল্ক সিটির টিকিট দেওয়া হচ্ছে। ওইদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা হবে। এখন বিমানবন্দর স্টেশন এলাকা দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কমলাপুর স্টেশনে আটকা পড়া ট্রেনগুলো একে একে ছেড়ে যাচ্ছে।স্টেশন সূত্র জানায়, ছাত্রদের জন্য সিল্ক সিটি ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে এই ট্রেন দিয়ে আগামী ২৫ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা।এর আগে সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার জাগো নিউজকে বলেন, বিমানবন্দর রেল স্টেশন দিয়ে ঢাকা থেকে সারাদেশের ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু সেখানে শিক্ষার্থীরা ট্রেন লাইন আটকে রাখায় কমলাপুর থেকে কোনো ট্রেন যেতে পারেনি। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ২৫টির বেশি ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে।গত ৭ জুলাই থেকে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ছয়দফা দাবিতে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
শুরুতে একা আন্দোলন করলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও অবস্থান নেন। কদিন ধরে সেখানে তারা গান, কবিতা, পথনাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।রনির অভিযোগ, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন নিবন্ধনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে তার পিন কোড ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রেনের কোনো আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হলো, তার কোনো রশিদও দেওয়া হয়নি।এদিকে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চ রেলস্টেশনে ঢাবি শিক্ষার্থী রনির অবস্থান নেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এ বিষয়ে তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *