
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় জেলা রেজিষ্ট্রার অফিসে একদিকে রেকর্ড কিপারের নিয়ম বহির্ভুত কর্মকান্ড অপরদিকে মুঘল আমলের উমেদার আর নৈশপ্রহরীর দাপট। সব মিলিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
বালাম বহির অনাধিকার চর্চা আর তল্লাশী প্রতিবেদনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দাবিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে রেকর্ড কিপার মোছাঃ সাজি আক্তারের বিরুদ্ধে। তার কথাবার্তায় মনে হয় দাপ্তরিক কার্যক্রম যেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এমন একটি ভিডিও ক্লিপও পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, বালাম বহি বের করে কলম হাতে কি যেন খুঁজেই চলছে অভিযুক্ত সাজি। ভ্রুক্ষেপ নেই সেবা গ্রহিতাদের দিকে। যদিও নির্দেশনা নেই অফিস চলাকালিন এই বালাম বহি পর্যবেক্ষণের।
ভিডিও ক্লিপে আরো দেখা যায়, সেবা গ্রহিতা তল্লাশী প্রতিবেদনের জন্য কত টাকা ফি? জানতে চাইলে সাজি আক্তার অকপটে দুই হাজার টাকা দাবি করেন। যেখানে সরকার নির্ধারিত ফি ও আনুষাঙ্গিক খরচসহ ৪-৫০০ টাকার বেশি নয়।
অতিরিক্ত অর্থ দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে সাজি বলেন, চাইতেই পারি চাইলেই কি মানুষ টাকা দেয়? নির্ধারিত ফি’র বাইরে কেন চাবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মানুষতো অনেক কিছুই চায়।
এদিকে, মুঘল আমলের সব কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে উমেদার পেশাজীবিরা। নেই কোন নিয়োগপত্র, ভয় নেই চাকুরী হারানোর। অথচ তাদের দাপটের কাছে অসহায় সাধারণ মানুষ। বলা চলে অফিসের সব কিছু এরাই নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও দৈনিক ৬০ টাকা মুজুরির চাকরিজীবী তারপরও অনেক সময় দেখা যায় এরা চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে থাকে অফিসারের মত। কেউ কেউ কোটিপতি বনে গেছেন। করেছেন সহায় সম্পদও। দৈনিক ৬০ টাকা বেতনের এই উমেদাররা অবাধে প্রবেশ করে মহাফেজখানা তথা রেকর্ড রুমে। যেখানে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়কারী রেজিষ্ট্রেশন বিভাগের মূল দায়িত্ব জনগণের সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল রেজিষ্ট্রি, রক্ষণাবেক্ষণসহ পুরাতন রেকর্ডপত্রাদি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ থাকে। এমনই একজন মমিনুর ইসলাম মমিন। পঞ্চগড় সদর রেজিষ্ট্রার অফিসের দৈনিক ৬০ টাকা বেতনের নৈশপ্রহরী। দেখলে মনে হবে কোন বড় কর্মকর্তা। সেবাপ্রার্থীরাও তাই ভাবে। যদিও তার দায়িত্ব রাতে কিন্তু তাকে দেখা যায় এজলাস চলাকালিন সময়ে সাব-রেজিষ্ট্রার আ.ন.ম বজলুর রহমান মন্ডলের ঠিক ডান পাশে। সেখান টেবিলে ভর করে দাঁড়িয়ে থেকে কি এমন কাজ করেন আর কেনই বা সাব-রেজিষ্ট্রার একজন নৈশপ্রহরীকে এত ঘনিষ্ঠ ভেবে প্রশ্রয় দেন প্রশ্ন জনমনে।
জানা গেছে, সাব-রেজিষ্ট্রারের ঠিক ডান পাশে একই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতো সরকারি বেতনভুক্ত নৈশপ্রহরী আনোয়ার হোসেন। সম্প্রতি কৌশলে ব্যক্তিগত দাপট আর প্রভাব খাটিয়ে আনোয়ারকে সরিয়ে সেই জায়গা দখল করেছে মমিন।
পঞ্চগড় জেলা রেজিষ্ট্রার মীর মাহাবুব মেহেদীর কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। কথা বলতে বলেন, সদর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার আ.ন.ম বজলুর রহমান মন্ডলের সাথে।
কিন্তু সাব-রেজিষ্ট্রার আ.ন.ম বজলুর রহমান মন্ডলও মুঠোফোনে এসব কিছু বলতে আগ্রহি নন। তিনি বলেন, রবিবারে সামনাসামনি আসিয়েন পরে বলবো।