Subscribe our Channel

ঠাকুরগাঁওয়ে সাসপেন্ড হওয়া সেই কৃষি কর্মকর্তার অপকর্ম ফাঁস

নিজস্ব প্রতিনিধি এমদাদুল ইসলাম ভূট্টো ,ঠাকুরগাঁও :    ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আছে কিন্তু উদ্ভিদ সংরক্ষণে নেই কোন ভূমিকার বালাই। অনিয়ম, দূর্নীতি, মাদক সেবন, নারী কেলেঙ্করীসহ নানা অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা যায় ওই কৃষি কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরের শান্তিনগর সংলগ্ন এলাকার এক নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হন। শুধু তাই নয় সে ওই নারীকে ফেনসিডিল, ইয়াবা খাইয়ে মাদক সেবনে আসক্ত করারও অভিযোগ উঠেছে। নারীর স্বামী ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকুরী করেন। তিনি বলেন এই কৃষি কর্মকর্তার জন্য আমার পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তার কারণে আজ আমাদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দু’টি সন্তান আছে। আমার বাড়িতে পরিবারের অন্য সদস্যরা না থাকার সুযোগ নিয়ে আমার স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ওই কৃষি কর্মকর্তা ফেনসিডিল, ইয়াবা এনে সেবন করতেন। এই ঘটনা জানাজানি হলে আমার সন্তান তীব্র প্রতিবাদ করে এবং ওই কৃষি কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে গালিগালাজ করে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন ওই কৃষি কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে বালিয়াডাঙ্গীর সূর্যপূরী আমগাছ এলাকা, রাণীশংকৈলের রামরাই পুকুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে আমার স্ত্রীকে মাদক সেবন করায়। তার একাধিক নারীর সাথে অবৈধ মেলা মেশা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ওই কৃষি কর্মকর্তার কর্মএলাকা পীরগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি এলাকায় আসে না। জাবরহাটের সার-বিষ ব্যবসায়ী মেসার্স মাহিম ট্রেডার্সের মালিক সাজেদুর রহমান বলেন আমার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স করার জন্য আড়াই হাজার টাকা নেয়। ওই এলাকার ভাই ভাই ট্রাডার্সের মালিক জাবরহাট ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এলাকায় আসে কি না আমার জানা নেই। কলিযুগ গ্রামের ছলিরাম বলেন পীরগঞ্জে গিয়ে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাকে পাওয়াই যায় না। পীরগঞ্জ পৌরশহরের বাসিন্দা এএস লিটন বলেন উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার দেখাই মিলে না। উপজেলা কৃষি অফিস হতে প্রাপ্ত উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার মাসিক ভ্রমন সিডিউল অনুযায়ী মাঠে গিয়ে একাধিকার কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় পোকা-মাকড় ও বালাই দমনে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার কোন ভূমিকা নেই। মালঞ্চা গ্রামের ভারত বলেন এই সমস্ত অসৎ কর্মকর্তাদের কারনে সরকারের কোটি কোটি টাকা গোচ্ছা যাচ্ছে।
একটি সূত্র জানায় উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা দ্্ুই বছর আগে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় অনিয়ম দূর্নীতির সাথে যুক্ত থাকার কারনে কর্তৃপক্ষ তাকে সাসপেন্ড করে। সূত্রটি আরো জানায় ডিপাটমেন্টের অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে ঘুষ খাইয়ে বদলী নিয়ে তার নিজ এলাকার পাশ^বর্তী উপজেলায় কর্মরত আছে।
ওই নারীর সাথে কথা বলে জানা যায় কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরিচয় হওয়ার পর সে আমার বাড়িতে আসতো। সে মাদক সেবন করতো আমার জানা ছিল না। আমাকে বিভিন্ন সময়ে ফেনসিডিল, ইয়াবা খাওয়াতো। আমার এখন মাদক না খেলে ভালই লাগে না।
উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনকে এই সকল অভিযোগ প্রসঙ্গে পীরগঞ্জ নিউজ এক্সপেস এর প্রতিনিধি মুঠোফোনে জানতে চাইলে,  তিনি হ্যাঁ হ্যাঁ বলেন এবং ব্যস্ত থাকার কথা বলে বিষয়টিতে এড়িয়ে যান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব হোসেন বলেন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনেক  সময়ে অভিযোগ শুনেছি। এক ব্যক্তিও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *