নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর সুপারভাইজার কর্তৃক দায়ের করা মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মামলা দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সংক্ষুব্দ সাধারণ মানুষ। শুক্রবার (১২ আগস্ট ২০২২) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের বাংলাচন্ডি গ্রামের পাকা রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে জুয়েলের দোকানের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি করেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মোছাঃ আরফিনা আক্তার। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর সুপারভাইজার কর্তৃক তার পরিবারের উপর গত বৃহস্পিতিবার (২৮ জুলাই) তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এই মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মূলত কোম্পানির মিডিয়া গুলোর মাধ্যমে তার পরিবারের উপর হয়রানি ও সম্মানহানী এই ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলাটি করেছেন। তিনি বলেন, সাবেক জেলা- জলপাইগুড়ি, পরবর্তীতে দিনাজপুর, হাল জেলা- পঞ্চগড় মধ্যে সাবেক পরগনা-বোদা, থানা- তেঁতুলিয়া, সাবেক তালুক ভজনপুর দেবনগড় মধ্যে জেএলনং-৩২ এর সি.এস ১১০ ও ১৬৪নং খতিয়ানের ষোল আনায় মালিক ছিলেন তার বড়আব্বা সদরতুল্ল্যা। পরবর্তীতে সদরতুল্ল্যা মারা যাওয়ার পর মালিক প্রাপ্ত হোন ছেলে মসির উদ্দিন। মসির উদ্দিন মালিকপ্রাপ্ত হওয়ার পর এই দুই খতিয়ানের ১২ দশমিক ১৩ একর জমি ষোল আনায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করাকালীন শিশু সন্তান গুলজারকে রেখে কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়।
এতে এস.এ রেকর্ড জরিপের সময় আজিম উদ্দিন, আকবর আলীসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি অসাধু রেকর্ড কর্মচারীর সহিত যোগসাজস করে কোনো প্রকার দলিলাদি ছাড়াই এস.এ ৫৫০ ও ৫৬০ নং খতিয়ানে অবৈধভাবে রেকর্ডভুক্ত হোন। এই দুই খতিয়ানের ষোল আনা সম্পত্তি পূর্বপুরুষ তো বটেই গুলজার হোসেন প্রায় ৫০/৬০ বছর যাবৎ শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন জানা যায়।
এসময় ভুক্তভোগী পরিবারসহ গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক পুরুষ-মহিলা সাধারন মানুষ ও মুরুব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। গ্রামবাসীর মধ্যে রেজিবুল ইসলাম, ওমিরুল ইসলাম, মাহাবুব আলম এরশাদসহ আরো অনেকে বলেন- গুলজার হোসেনের উপর যে মামলাটি করা হয়েছে এই মামলাটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক এবং মিথ্যা। গ্রামবাসী এই ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মামলার ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা বলেন, কোম্পানির মিডিয়াদের সহযোগিতায় এই ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলাটি গুলজারের পরিবারের উপর করা হয়েছে। এতে গ্রামবাসী অনেকেই গুলজারের পরিবারের উপর এই মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দিতে পঞ্চগড় বিজ্ঞ আদালতকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। মামলার আসামী মামুন বলেন, সি.এস ১১০ ও ১৬৪ এর এস.এ ৫৫০ ও ৫৬০ নং খতিয়ানের ষোল আনা জমাজমি তাদেরই ভোগদখলে আছেন। শান্তিতে ভোগদখলে থাকাকালীন এস.এ খতিয়ানে অবৈধভাবে রেকর্ড ভুক্ত ব্যক্তিগণ ইতোপূর্বে স্থানীয় গ্রাম আদালতে তার পিতা গুলজার হোসেনের নামে অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগকারী ব্যক্তি রেকর্ড স্বত্ত্বের কোন কাগজপত্রাদি উপস্থাপন না করে দখলবিহীন জমাজমি বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কোম্পানির নিকট বিক্রয় করেন। পরে কোম্পানি তাদের (মামুনের) ভোগদখলীয় জমাজমি বেদখল করার পাঁয়তারা শুরু করেন। এরই রেশ ধরে তাদের উপর ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিতে রেখে জেলহাজতে পাঠিয়ে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত, তেঁতুলিয়া পঞ্চগড়ের অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দখলের পাঁয়তারায় লিপ্ত আছেন বলে জানিয়েছেন। এই মামলায় জেলহাজতে থাকা রেজিবুল ইসলামের স্ত্রী সবুরা বেগম বলেন, বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কোম্পানি তাঁর শ্বশুরের পরিবারের উপর মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। যেদিন কোম্পানির ঘটনা ঘটেন সেদিন তার ননদের বিয়ের দিন ছিলেন।
কিছু ‘মামলা মিথ্যা হয়, তাই বলে যে এই মামলাটা এতই মিথ্যা’ বলতে তিনি বুঝিয়েছেন, ননদের নতুন বরকে এই মামলায় আসামী করেন বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর সুপারভাইজার খাদেমুল ইসলাম। তিনি আরোও বলেন, কেউ নিজের বোনের বিয়ের দিনে এই ধরণের ঘটনা ঘটাতে পারেন না। মিডিয়াদের কারণে তার শ্বশুরের উপর এই মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর সুপারভাইজার খাদেমুল ইসলামকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, এ বিষয়টি সাক্ষাতে বলতে হবে এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানাবেন জানান। পরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করতে বলেন, আপনি সঠিক তথ্য পাবেন। তিনি বলেন, কোম্পানি সঠিকের উপরে আছে, প্রয়োজন হলে কোম্পানিই করবে না।